জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত কমিশনের সঙ্গে তৃতীয় দফার আলোচনায় অংশ নিয়েছে বিএনপি। মঙ্গলবার সকাল ১১টা ১০ মিনিটে জাতীয় সংসদের এলডি হলে এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক শুরু হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ও রোববার দিনভর আলোচনা শেষে বৈঠক মূলতবি করা হয়েছিল। ধারাবাহিক সেই আলোচনারই অংশ হিসেবে আজ ফের বসেছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা।
বিএনপির চার সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। প্রতিনিধি দলে আরও রয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাঈল জবিউল্লাহ, আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল এবং সাবেক সচিব আবু মো. মনিরুজ্জামান খান।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বিশিষ্ট রাজনীতি বিশ্লেষক অধ্যাপক আলী রীয়াজ। উপস্থিত রয়েছেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সাবেক বিচারপতি এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।
সালাহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, আলোচনায় প্রজাতন্ত্র ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি, মৌলিক অধিকার, আইন ও বিচার বিভাগের কাঠামো, দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যকারিতা, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এসিসি), নির্বাচন ব্যবস্থা ও সংবিধান সংস্কারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর মতবিনিময় হয়েছে। তিনি আরও বলেন, রোববারের আলোচনার যেখানে সমাপ্তি ঘটেছিল, আজ সেই জায়গা থেকেই আলোচনা পুনরায় শুরু হয়েছে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, “আজকের মধ্যে আমরা এই আলোচনা সম্পন্ন করতে পারব।”
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার নিশ্চিত করতে দুই ধাপে ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে গঠিত হয় পাঁচটি কমিশনের সমন্বয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
এই কমিশনের অধীনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম বৈঠক, যেখানে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
পরবর্তীতে সংবিধান, জনপ্রশাসন, বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থা ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে গঠিত পাঁচটি সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের মতামত চাওয়া হয়। এর মধ্যে ৩৪টি দল তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে, যাদের সঙ্গে এখন একে একে বৈঠক করছে ঐকমত্য কমিশন। ইতোমধ্যে ১৫টি দলের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে।
তৃতীয় দফার আলোচনায় বিএনপির অংশগ্রহণ এই প্রক্রিয়াকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপে পৌঁছে দিয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।