নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বাকলজোড়া ইউনিয়নের আব্বাছনগর গ্রামে বিএনপির দুই পক্ষের বিরোধের জেরে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৫-৬ জন। বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে এই ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান।
নিহত ব্যক্তির নাম শফিকুল ইসলাম সফু (৪০)। তিনি আব্বাছনগর গ্রামের বাসিন্দা এবং স্থানীয়ভাবে একটি কাঠের মিলে কাজ করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট হামিদুর রহমান রাশেদ আসন্ন ঈদ উপলক্ষে শুভেচ্ছামূলক কিছু পোস্টার পাঠান। তার অনুসারীরা এগুলো দুর্গাপুর বাজার এবং স্থানীয় বিএনপি অফিসে লাগাতে গেলে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল মাস্টারের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং বিষয়টি জানানো হয় স্থানীয় থানাকে। অভিযোগ রয়েছে, এরপর ক্ষুব্ধ হয়ে জামাল মাস্টারের নেতৃত্বে ২৫-৩০টি মোটরসাইকেলযোগে একদল ব্যক্তি আব্বাছনগর গ্রামে গিয়ে হামলা চালায়। তারা হামিদুর রহমান রাশেদের বাড়ি ও স্থানীয় বাজারে হামলা ও ভাঙচুর করে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন রাশেদের দূরসম্পর্কের ভাতিজা শফিকুল ইসলাম।
নিহতের পরিবারের দাবি, হামলাকারীরা দেশি অস্ত্রসহ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে এবং ঘটনাস্থলে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে শফিকুল ইসলাম পেটে গুলিবিদ্ধ হন এবং ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং রাত ১২টার দিকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। ওসি মাহমুদুল হাসান জানান, হামলার ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও আটকের চেষ্টা চলছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
জানা গেছে, হামিদুর রহমান রাশেদ বিএনপির সাবেক হুইপ ও পরবর্তীতে এলডিপি নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুল করিম আব্বাছীর ভাতিজা। তাঁর নামানুসারে গ্রামটির নামকরণ হয়েছে আব্বাছনগর। অন্যদিকে, অভিযুক্ত জামাল মাস্টারের বাড়ি পাশের মাঝিয়াইল গ্রামে। তিনি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইমাম হাসান আবুচানের ছেলে এবং উপজেলা বিএনপির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা।
স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই ঘটনা আবারও বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ভয়াবহ রূপকে সামনে নিয়ে এসেছে।