Sadrul Law:
ড. ইউনূস পদত্যাগ করছেন।তিনি ফ্রান্সের একটি বিমান ভাড়া করে দেশত্যাগ করবেন বলে চেষ্টা চলছে।দেশে জরুরি অবস্থা জারি হতে পারে যে কোন সময়।
এমনি হাজারও কথামালা, উদ্বেগ উৎকন্ঠার মধ্যে অতিবাহিত হচ্ছে বাংলাদেশ। তবে এ কথা অনিবার্য যে, সেনাপ্রধান তথা সেনাবাহিনীর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের টানাপোড়েন চলছে যা অনেকটাই দৃশ্যমান।
ড. ইউনূসকে ঘিরে থাকা একটি চক্র এমন কথা ছড়াচ্ছে বলে সংবাদ মাধ্যমের অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয়েছে।তারাই আবার ড. ইউনূসকে বোঝাচ্ছেন অন্যভাবে। অর্থাৎ দ্বিমুখী চরিত্রে অভিনয়ের কারনে ড. ইউনূস এখন জনগনের সমর্থন ও তার পাশে থাকা বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন।
বিশেষ করে চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা,মানবিক করিডোরের নামে সেন্টমার্টিনকে জনগন প্রবেশে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া,সেনাবাহিনীকে অন্ধকারে রেখে সিদ্ধান্তগ্রহনের মত ভুল সিদ্ধান্তের কারনে সরকার ও সেনাবাহিনী পরষ্পর মুখোমুখি এমন সংবাদে তোলপাড় বিদেশি সংবাদ মাধ্যমগুলো।
অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর ক্রমেই দূরত্ব বাড়ছে। তবে এনসিপির সঙ্গে সম্পর্কের কমতি নেই। দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, গত চারদিন একটানা চেষ্টা করেও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপি সাক্ষাৎ পেতে ব্যর্থ হয়েছে।
জামায়াতে ইসলামীর তরফেও বারবার সর্বদলীয় বৈঠক আহ্বানের তাগিদ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু কোনো অনুরোধেই ড. ইউনূস সাড়া দেননি।
ওদিকে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে ইতিমধ্যেই দু’দফা বৈঠকের খবর পাওয়া গেছে। ‘২০২৬-এর ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে দু’দলের মধ্যে কথাবার্তা চলছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো বলছে, প্রফেসর ইউনূসকে ঘিরে রেখেছে একটি অশুভ চক্র। এই চক্রে রয়েছে সাতজন। ভেতরে চার, বাইরে তিন।
এরা সবাই সু-শিক্ষিত কিন্তু চরম দক্ষিণপন্থী রাজনীতির সঙ্গে তাদের প্রচণ্ড ঝোঁক রয়েছে। এই চক্রটি চায় না নির্বাচনের দিকে দেশ এগিয়ে যাক। তাদের মতলব অন্য।
তারা প্রফেসর ইউনূসকে জনবিচ্ছিন্ন করতে চায়। সর্বশেষ খবরে জানা যায়, সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। আর এই সংকট উত্তরণে কোনো উদ্যোগ নেই বরং উল্লেখিত চক্রটি নানা খেলায় মত্ত রয়েছে।
তারাই বলছে, প্রফেসর ইউনূস পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন। আমরা তাকে পদত্যাগ থেকে বিরত রেখেছি। তারাই এখন জরুরি অবস্থা জারি হচ্ছে এমন খবর রটাচ্ছে। বাস্তবের সঙ্গে এর কোনো মিল নেই।
বৃহস্পতিবার প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান ড. আলী রীয়াজের বৈঠক হয়েছে। ঠিক কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তা এখন পর্যন্ত জানা সম্ভব হয়নি।
তবে ধারণা করা হচ্ছে, সেনাপ্রধানের বক্তব্য এবং সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি তারা পর্যালোচনা করেছেন। সেনাবাহিনী ড.ইউনূসকে যে যে কোন সময় গ্রেফতার করতে পারেন, এমন একটি জোরালো গুঞ্জন রয়েছে সারাদেশে।
এছাড়া ওইদিনই অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। প্রায় চার ঘণ্টা চলে এই বৈঠক। এতে প্রধান উপদেষ্টা কতিপয় উপদেষ্টার ভূমিকায় হতাশা ব্যক্ত করেন।
প্রফেসর ইউনূস পদত্যাগ করলেই সব সংকটের সমাধান হয়ে যাবে না। এটা মনে করার কারণও নেই। বরং সংকট আরো তীব্র হবে। প্রফেসর ইউনূস যদি সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত না নেন, তাহলে খেলা তার হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বিপ্লবের মূল চেতনা।
ছাত্র লীগ ও আ.লীগকে নিষিদ্ধ করার মূলমন্ত্রদাতাদের যে ছক ছিল তা অধিকাংশ রাজনৈতিক দলগুলো সমালোচনা করেছে। যে দলের নেত্রীত্বে দেশের স্বাধীনতা এসেছে,যারা ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে, ৬৬ র ৬ দফা, ‘৬৯ ‘র গণঅভ্যূত্থানসহ দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের যাদের ইতিহাস স্বর্ণালী গৌরবদীপ্ত তাদেরকে নিষিদ্ধ করাকে দেশ বিদেশের কোন শক্তিই ভাল চোখে নেননি।
বিশেষ করে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে যে নির্বাচনের ছক কষা হয়েছিল তা সরকারকে চরম সমালোচনা ও বেকায়দায় ফেলেছে।
দিন যতই যাচ্ছে সাধারন মানুষ ততই জুলাই চেতনা থেকে সরে আসছে। সরকারের যে স্পিরিট ছিল তা কোন এক অদৃশ্য কারনে বিপথগামী হয়েছে। দেশে চলমান সংকট দিনকে দিন ঘণীভূত হচ্ছে। বিশেষ করে সেনাবাহিনী ও সরকারের দুরত্ব মতানৈক্য এখন ওপেন সিক্রেট।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, চলমান সংকট কাটাতে জামাত বিএনপি’র নেতৃত্বে একটি জাতীয় সরকার গঠন করে আগামি ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে।
যদি এ পরিকল্পনা সফলও হয় তবে অন্তর্বর্তী সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। আ. লীগের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে সকল দলের সমন্বয়ে জাতিয় সরকার গঠন করতে হবে। তা না করা হলে অর্থাৎ আ.লীগকে বাইরে রেখে জাতিয় সরকার গঠন,নির্বাচন হলে সেই সরকার আন্তর্জাতিক গ্রহনযোগ্যতা পাবে না।
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের কিছু যে ঘটতে যাচ্ছে এতে সন্দেহ নেই।