Staff Correspondent:
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে গেছে। কোথাও নারীদের নিরাপত্তা নেই। প্রশাসন ঠিক থাকলে সমাজে ধর্ষণ, খুনের মতো ঘটনা হতো না।
এখন তো অন্তবর্তী সরকার, স্বৈরাচার তো নাই; তাহলে কেন এসব ঘটনা ঘটছে? প্রশাসনে কারা? আমরা অনেকবারই বলেছি— কোনোদিনই সমাজে ধর্ষণ, খুন, জখম, দুর্নীতির প্রসার ঘটবে না, যদি আপনার প্রশাসন ঠিক হয়। যদি প্রশাসন ঠিক থাকতো তাহলে এটি হতো না।
সোমবার (১০ মার্চ) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আয়োজনে ‘মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদে ও ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে’ এই সমাবেশ হয়।
সভা শেষে নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হন নেতা–কর্মীরা। মিছিলটি কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বের হয়ে বিজয়নগর মোড় হয়ে পল্টন মোড় দিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। মিছিলে নেতা–কর্মীরা ধর্ষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
সমাবেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনার আমল থেকেই নারীরা নির্যাতিত হয়েছিলেন। এখন তো ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেই, তাহলে কারা এই হিংস্রতার সঙ্গে জড়িত। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তা জানতে চাই।
সরকারের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ভূমিকায় হতাশা প্রকাশ করে রিজভী বলেন, ‘আপনার (সরকার) পুলিশ বাহিনী আছে। যখন ঘটনা ঘটে আমরা কী করব, আমরা দেখছি, অপরাধীদের ছাড় দেওয়া হবে না। অপরাধী অপরাধ করার আগে আইনের প্রয়োগ যদি ঠিকঠাক থাকত, আইনের শাসন প্রয়োগ করা হতো, তাহলে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না।’ দ্রুততম সময়ে ধর্ষণকারীদের বিচারের আওতায় আনতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
রিজভী দুর্নীতি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে আন্দোলন প্রতিবাদ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সমাজে যারা দুর্নীতি করবে, প্রশাসনের বিরুদ্ধে গিয়ে আপনারা কথা বলবেন। তাহলে আপনারা দেখবেন সমাজ থেকে চোর, ডাকাত, ধর্ষিতা, অপরাধীর সংখ্যা কমে যাবে।
সমাবেশে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আফরোজা আব্বাস বলেন, ধর্ষণ আগেও হতো, কিন্তু কম হতো। শেখ হাসিনার আমলে এটি গণধর্ষণে পরিণত হয়েছে। বিচারহীনতার কারণে এই সংস্কৃতির সৃষ্টি হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে এই বিচারহীনতার সংস্কৃতির ধারাবাহিকতায় নারী ও শিশু ধর্ষণের হার দিন দিন বাড়ছে। মহিলা দলের সভাপতি ধর্ষণের মামলার বিচার ১৮০ দিনে নয়, এক সপ্তাহের মধ্যেই নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর নার্গিসের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন মহিলা দলের সহ-সভাপতি নেওয়াজ হালিমা আর্নি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাম্মি আক্তার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভানেত্রী রুমা আক্তার ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট রুনা লায়লা প্রমুখ।