হুমায়ন কবির মিরাজ, বাগআঁচড়া:
যশোরের শার্শা উপজেলার হরিনাপোতা গ্রামে অবস্থিত সোনামুখি বিল। বছরের পর বছর পড়ে থাকা নিঃশব্দ এক জলাভূমি, যা এখন পরিণত হয়েছে সৌন্দর্যের এক অপরূপ উৎসে। কাদামাটির বুক চিরে ফুটে থাকা লক্ষ লক্ষ গোলাপি পদ্মফুল যেন জানান দিচ্ছে—প্রকৃতি নিজের মতো করেই ফিরে আসে, ফিরে আসে মুগ্ধতা ছড়াতে।
বৈশাখের খরায় যখন অধিকাংশ জলাশয় শুকিয়ে গেছে, তখন পানিশূন্য এই বিলে চোখ জুড়ানোভাবে ফুটে উঠেছে পদ্মফুল। গোলাপি রঙের পাঁপড়িতে খেলা করে সূর্যের আলো। চারপাশে ভেসে বেড়ায় দেশীয় পাখির কলকাকলি, আর প্রকৃতি যেন আপন ছন্দেই বলে উঠছে—”এই পৃথিবী এখনো সুন্দর।”
সোনামুখির এই অপরূপ দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই সাড়া পড়ে যায় ভ্রমণপ্রেমীদের মাঝে। কেউ মোবাইল ফোনে বন্দি করছেন সৌন্দর্য, কেউবা পেশাদার ক্যামেরায়। টিকটক, ফেসবুক, ইউটিউবে ভেসে বেড়াচ্ছে সোনামুখির গোলাপি পদ্মের দৃশ্য। প্রকৃতির এই জীবন্ত চিত্র যেন হয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক শান্তির বার্তাবাহী।
বিলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে এসেছেন নানা স্থান থেকে ইউটিউবার, কনটেন্ট ক্রিয়েটর আর প্রকৃতিপ্রেমীরা।
ইউটিউবার আসাদুর রহমান বলেন, “প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো কয়েকটা পদ্মফুল দেখা যাবে। কিন্তু এখানে এসে দেখি, কাদামাটিতে যেন পদ্মের সমুদ্র! প্রকৃতির এমন অমোঘ সৌন্দর্য আমার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।”
তিনি আরও বলেন, “দিনকে দিন আমরা প্রকৃতির সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলছি। কিন্তু সোনামুখি বিলে এসে মনে হলো, প্রকৃতি এখনও জীবিত। শুধু দরকার আমাদের ভালোবাসা, যত্ন আর সচেতনতা।”
এই বিল যেন একটি জীবন্ত বার্তা—যেখানে প্রকৃতি প্রতিনিয়ত বলে যাচ্ছে, যত্ন না নিলে সৌন্দর্যও একদিন হারিয়ে যায়। তাই দরকার সংরক্ষণ, সচেতনতা আর সম্মিলিত ভালোবাসা।
সোনামুখি বিল শুধু একটি জায়গার নাম নয়—এটি এখন ভালোবাসার প্রতীক, প্রাণের স্পর্শ পাওয়া এক ফুলেল আঙিনা। যেখানে প্রতিটি পদ্ম আমাদের চোখে আর মনে বুনে দেয় প্রশান্তির ছবি।