আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার সাউথ কলকাতা ল কলেজে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে রাজ্যজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
২৫ জুন কলেজের ভেতরেই ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। মূল অভিযুক্ত প্রাক্তন ছাত্র মনোজিৎ মিশ্র এবং সহায়তাকারী দুই বর্তমান ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় রাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
২৬ জুন কসবা থানায় দায়ের করা অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী ছাত্রী জানিয়েছেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১০টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত তাঁকে যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে।
মেডিকেল পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত মেলে। পুলিশ তদন্তে নেমে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে চার দিনের হেফাজতে নিয়েছে এবং ঘটনাস্থল সিল করে অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন জব্দ করেছে।
অভিযোগে বলা হয়, প্রাক্তন ছাত্র মনোজিৎ মিশ্র, যিনি কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) সাবেক সভাপতি, ছাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। প্রত্যাখ্যানের জেরে ইউনিয়ন কক্ষে তাঁকে আটকে রেখে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়।
ঘটনায় মনোজিৎ ও তাঁর সঙ্গে থাকা দুই ছাত্র নিরাপত্তাকর্মীদের কক্ষ খালি করিয়ে সেখানে ধর্ষণ করেন। তরুণীকে হকিস্টিক দিয়ে আঘাত ও ভিডিও দেখিয়ে ভয় দেখানো হয়।
জাতীয় মহিলা কমিশন মামলাটি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তদারকি করছে এবং কলকাতা পুলিশকে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলেছে।
প্রধান সরকারি কৌঁসুলি সৌরিন ঘোষাল জানান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী, দলবদ্ধ ধর্ষণের ক্ষেত্রে সহায়তাকারীরাও অভিযুক্ত হন। তাই তিনজনের বিরুদ্ধেই দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলা হয়েছে।
মূল অভিযুক্ত মনোজিৎকে ৪৫ দিনের জন্য অস্থায়ীভাবে কলেজে নিযুক্ত করা হয়েছিল। সামাজিক মাধ্যমে তাঁর তৃণমূল ছাত্রসংগঠনের পদধারী ও দলের নেতাদের সঙ্গে ছবি রয়েছে।
তবে তৃণমূল কংগ্রেস বলেছে, মনোজিতের সঙ্গে বর্তমানে দলের কোনো সম্পর্ক নেই এবং দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।
এ ঘটনা রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কাসবা থানার সামনে এসএফআই ও ডিওয়াইএফআই বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। বিজেপি ও কংগ্রেস আলাদাভাবে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে।
মাত্র এক বছরের মধ্যে আর জি কর মেডিকেল কলেজে এক ইন্টার্ন চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পুনরাবৃত্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে এ ঘটনাকে। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নিরাপত্তা জোরদারের দাবি ফের জোরালো হচ্ছে।