মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাকে ফোন করে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নিরসনে সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে ট্রাম্প স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, রুশ সহায়তার প্রয়োজন নেই। ন্যাটো সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়ার পথে গতকাল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের তিনি জানান, “ভ্লাদিমির পুতিন আমাকে ফোন করেছিলেন ইরান ইস্যু নিয়ে আমাকে সাহায্য করার জন্য। কিন্তু আমি বলে দিয়েছি তার সাহায্য লাগবে না।”
ট্রাম্প আরও বলেন, তিনি রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি দেখতে চান, যদিও এ বিষয়ে কোনো বিস্তারিত তথ্য দেননি। তিনি বলেন, “আমি আশা করি আমরা রাশিয়ার সঙ্গে একটা চুক্তিতে পৌঁছাতে পারব। এটা দুঃখজনক যে গত সপ্তাহে ছয় হাজার সেনা নিহত হয়েছে।”
রাশিয়া বর্তমানে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে গ্রীষ্মকালীন নতুন সামরিক আক্রমণ শুরু করেছে। কিয়েভসহ পশ্চিমা দেশগুলোর যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা করে ক্রমেই সংঘাত বাড়িয়ে চলেছে মস্কো। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাশিয়া ও ইরানের মধ্যে রাজনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে। ইরান ইতোমধ্যে রাশিয়াকে হাজার হাজার শাহেদ সিরিজের ড্রোন সরবরাহ করেছে, যা ইউক্রেনের শহরগুলোতে হামলায় ব্যবহার করা হচ্ছে।
এছাড়া, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখে নিজেদের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়েও একযোগে কাজ করছে এই দুই দেশ। রাশিয়া ইতোমধ্যে ইরানকে মধ্যপ্রাচ্যের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সরবরাহ করেছে, যা নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
সম্প্রতি ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। তেলআবিবসহ একাধিক স্থানে চালানো ওই হামলায় পাঁচজন ইউক্রেনীয় নাগরিকও নিহত হন। ইরান বলেছে, ইসরায়েলের সামরিক হামলার জবাব হিসেবেই তারা এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
এই উত্তেজনার মধ্যেই ট্রাম্প ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন হয় এবং আবারও দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে রাশিয়ার সক্রিয় ভূমিকা এবং ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।