আজ, মিশরের হুরঘাডা শহরে একটি ভয়াবহ সাবমেরিন দুর্ঘটনায় ছয় জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। এই দুর্ঘটনা পর্যটকদের জন্য জনপ্রিয় এই অঞ্চলে এক বড় ধরনের বিপর্যয়ের সূচনা করেছে। সাবমেরিনের সঠিক অবস্থান এবং সাঁতারের গভীরতার তথ্য এখনও প্রকাশ করা হয়নি, তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, এটি একটি বড় ধরনের দুর্ঘটনা, যার ফলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন উঠেছে।
এই ঘটনায় বহু পর্যটক আহত হয়েছেন, যার মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। কিছু স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, দুর্ঘটনার কারণ এখনও পরিষ্কার নয়, তবে এটি যে খুবই সিরিয়াস একটি ঘটনা, তা নিশ্চিত। এই সাবমেরিন দুর্ঘটনার পর, স্থানীয় প্রশাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করা এবং পর্যটন সেক্টরের নিয়মিত নিরাপত্তা পরিদর্শন না করাকেও এক ধরনের অবহেলা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
পূর্বে, নভেম্বর মাসে, মিশরীয় কর্মকর্তারা সি স্টোরি নামক সাবমেরিনের ডুবি সম্পর্কে দাবি করেছিলেন যে খারাপ আবহাওয়ার কারণে এটি ডুবে গিয়েছিল। তবে, বিখ্যাত সংবাদ মাধ্যম বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া কয়েকজনের সাক্ষাৎকার নিয়েছিল, যারা এই দাবির সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, সে দিন আবহাওয়া ছিল উষ্ণ এবং সানি, যা এমন ধরনের দুর্ঘটনার জন্য উপযুক্ত ছিল না।
এখন, হুরঘাডার এই ঘটনা তদন্তাধীন রয়েছে, এবং কিছু স্থানীয় সূত্রে জানানো হয়েছে যে এই ধরনের দুর্ঘটনা খুবই অপ্রত্যাশিত ছিল। কর্তৃপক্ষ তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে তারা ঘটনার কারণ সম্পর্কে একটি বিস্তারিত তদন্ত শুরু করেছে, তবে অনেকেই মনে করছেন যে এই ধরনের ঘটনা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাব এবং পর্যটকদের সুরক্ষা নিয়ে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার দরকার নির্দেশ করে।
এদিকে, মিশরের বর্তমান আবহাওয়া খুবই উষ্ণ এবং সানি, যা সাবমেরিন ডুবির মতো ঘটনা ঘটানোর জন্য অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি বলে মনে হচ্ছে। তবে, এই ধরনের দুর্ঘটনা একাধিক প্রশ্নের জন্ম দেয়, বিশেষ করে পর্যটন এলাকা গুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকরিতা নিয়ে। সঠিক নিরাপত্তা পরিদর্শন এবং পর্যটন অভিযানের জন্য আরও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত, যাতে ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।
এই ঘটনার পর মিশরের পর্যটন শিল্প এবং তার সাথে সম্পর্কিত কর্তৃপক্ষের উপর আরও কঠোর নজরদারি এবং নিরাপত্তা পর্যালোচনার দাবি উঠতে শুরু করেছে। এটি মিশরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার একটি বড় পরীক্ষাও বটে, যা বিশ্বের কাছে মিশরের পর্যটন খাতের সুরক্ষা নিয়ে এক নতুন আলোচনার সূচনা করতে পারে।
সাবমেরিন হল একটি বিশেষ ধরনের জলযান, যা পানির নিচে চলাচল করতে সক্ষম। এটি সাধারণত সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হলেও বিভিন্ন বাণিজ্যিক এবং বৈজ্ঞানিক উদ্দেশ্যেও ব্যবহার করা হয়। সাবমেরিনের ডিজাইন এমনভাবে তৈরি করা হয় যে এটি পানির তলদেশে সাঁতার কাটতে পারে এবং দীর্ঘ সময় ধরে পানির নিচে অবস্থান করতে পারে। এর জন্য এটি বিশেষ ধরনের শক্তিশালী এবং সিলড ডেক ব্যবহার করে, যা পানি থেকে পানি প্রবাহ এবং বাইরে থেকে প্রবাহিত গ্যাস বা অক্সিজেনের অপ্রয়োজনীয় প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করে।
সাবমেরিনের কার্যক্রম:
সাবমেরিন দুটি প্রধানভাবে কাজ করে:
নগ্ন অবস্থায় চলাচল: এটি পানির তলদেশে স্থিতিশীলভাবে চলাচল করতে পারে এবং এটি তার বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী পানির নিচে নেমে যেতে এবং উঁচুতে উঠতে সক্ষম।
নিরাপত্তা ও আক্রমণ: সাবমেরিন প্রায়ই সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়, বিশেষ করে যুদ্ধজাহাজ হিসেবে। এটি যুদ্ধের জন্য একটি কার্যকর বাহন হিসেবে ব্যবহার হয়, যেখানে বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র বা টরপেডো ধারণ করে শত্রুর জাহাজ বা সাবমেরিন আক্রমণ করতে পারে।
সাবমেরিনের যন্ত্রপাতি:
সাবমেরিনের মূল যন্ত্রপাতির মধ্যে রয়েছে:
হাইড্রোলিক সিস্টেম: যা সাবমেরিনের ডুবানো এবং উত্থাপন করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
প্রপেলার: এটি সাবমেরিনের চলাচল পরিচালনা করে।
লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম: যাতে পানির নিচে থাকার সময় প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ ও কার্বন ডাইঅক্সাইড অপসারণ করা যায়।
সিভিল ব্যবহার:
বর্তমানে, সাবমেরিন শুধু সামরিক কাজে ব্যবহৃত হয় না, বরং বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্যও ব্যবহার করা হয়। বিজ্ঞানীরা পানির নিচে গবেষণার জন্য বা মহাসাগরের অগভীর অঞ্চলগুলোতে অনুসন্ধান করতে সাবমেরিন ব্যবহার করেন। এমনকি কিছু সিভিল সাবমেরিন বিশেষ পর্যটকদের জন্য তৈরি করা হয়, যাতে তারা সমুদ্রের নিচে জীবনযাত্রা দেখতে পারে।
সাবমেরিন ব্যবহারের মধ্যে কিছু নিরাপত্তা ঝুঁকি আছে, যেমন গভীর পানির নিচে সমস্যা হতে পারে বা যান্ত্রিক ত্রুটি ঘটতে পারে, যা মানব জীবনকে বিপদে ফেলতে পারে। তাই সাবমেরিনগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।