আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ সেনাবাহিনীকে গাজায় আরও নতুন এলাকা দখলের নির্দেশ দিয়েছেন এবং হুমকি দিয়েছেন যে, যদি হামাস সব বাকি বন্দিদের মুক্ত না করে, তাহলে ইসরায়েল গাজার কিছু অংশ স্থায়ীভাবে দখল করে রাখবে।
তিনি বলেন, “হামাস যত বেশি অস্বীকার করবে, তত বেশি এলাকা ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।”
গত জানুয়ারি থেকে চলা অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি এই সপ্তাহে ভেঙে যায়, যখন ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক বিমান হামলা শুরু করে। এতে কয়েকশ মানুষ নিহত হন।
হামাস দাবি করেছে, তারা মধ্যস্থতাকারীদের (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিশর) সঙ্গে দায়িত্বশীলতার সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ইসরায়েল বলছে, হামাস আলোচনার পথ বন্ধ করে দিয়েছে।
বর্তমানে গাজায় ৫৯ জন ইসরায়েলি বন্দি রয়েছে, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, কারণ যুদ্ধবিরতি আলোচনায় কোনো অগ্রগতি হয়নি।
মার্কিন মধ্যস্থতায় একটি তিন ধাপের যুদ্ধবিরতি চুক্তি প্রস্তাবিত হয়েছিল, কিন্তু ইসরায়েল ও হামাস প্রথম ধাপের পরবর্তী পর্যায়ে সম্মত হতে ব্যর্থ হয়।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী কাটজ আরও বলেন, গাজায় স্থায়ীভাবে দখল বজায় রাখার পরিকল্পনা রয়েছে এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের “গাজার বাসিন্দাদের স্বেচ্ছা স্থানান্তরের” পরিকল্পনাও বাস্তবায়ন করবে।
ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী, গাজায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে সেখানে নতুন অবকাঠামো তৈরি করা হবে। তবে হামাস ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, “গাজা বিক্রির জন্য নয়” এবং জাতিসংঘ বলেছে, “বলপ্রয়োগে স্থানান্তর জাতিসংঘের আইন অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধ ও জাতিগত নির্মূলতার শামিল।”
ইসরায়েল গাজার উপর মার্চের শুরুতে খাদ্য, জ্বালানি ও চিকিৎসা সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়। দেশটি দাবি করেছে, হামাস ত্রাণসামগ্রী ব্যবহার করছে, যদিও এই দাবির সপক্ষে তারা কোনো প্রমাণ দেয়নি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় হামলা চালায়, যেখানে এখন পর্যন্ত ৪৯,৫০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বর্তমানে, ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে নিন্দা এবং মানবিক সহায়তার আহ্বান জানানো হচ্ছে। তবে ইসরায়েল ঘোষণা করেছে, যুদ্ধ তখনই শেষ হবে, যখন হামাস সম্পূর্ণ পরাজিত হবে এবং সব বন্দির মুক্তি নিশ্চিত হবে।