পহেলা বৈশাখ মানেই বাঙালির প্রাণের উৎসব। বাংলা নববর্ষকে ঘিরে বর্ণিল আয়োজনে মাতেন সবাই—আর তারকাদের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নেই। দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান এবারও মনপ্রাণ দিয়ে উপভোগ করছেন নববর্ষের উৎসব। সম্প্রতি হিন্দুস্তান টাইমস-কে দেওয়া এক ফোন সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী তুলে ধরেছেন তার বৈশাখী আনন্দের নানা মুহূর্ত।
জয়া জানান, “আমার তো উৎসব শুরুই হয়ে গেছে!” গত দু’দিন ধরেই তার বাড়িতে চলছে উৎসবের আমেজ। চৈত্র সংক্রান্তি ও পহেলা বৈশাখ—দুই দিনেই জমিয়ে খাওয়া-দাওয়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর গ্রামীণ মেলার মধ্যে ডুবে ছিলেন এই গুণী শিল্পী।
১৩ এপ্রিল তিনি যোগ দেন হইচই-এর ‘জিম্মি’ ওয়েব সিরিজের টিমের আয়োজিত চৈত্র সংক্রান্তির এক অনুষ্ঠানে। সন্ধ্যায় সেই আয়োজনে থাকার পর রাত ১২টার পর চলে যান গুলশানের সাহাবুদ্দিন পার্কে। সেখানে ছিল আল্পনা আঁকার উৎসব, যেখানে ছিল বাউল সংগীত, জলের গান সহ নানা বাংলা ব্যান্ডের পরিবেশনা। এসব আয়োজন নিয়ে তিনি বলেন, “এটা কোনও ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং আমাদের সংস্কৃতি। তাই এ ধরনের উদ্যোগ আরও বেশি হওয়া দরকার।”
শহরের গন্ডি পেরিয়ে এবার জয়া ছুটে চলেছেন গ্রামের বৈশাখী মেলাগুলোর দিকে। তিনি বলেন, “আমি মনে করি, উৎসব শুধু শহরে সীমাবদ্ধ না থেকে গ্রামের মানুষদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়া উচিত। তাই এবার শহরকেন্দ্রিক কোনও বড় মেলায় না গিয়ে যাচ্ছি বিভিন্ন গ্রামীণ মেলায়।”
১৪ এপ্রিল সকালে তিনি অংশ নেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের একটি বৈশাখী মেলায়, যেখানে ছিল ইলিশ-পান্তার উৎসব। সেখানে নিজে উপস্থিত থেকে তিনি উপভোগ করেন গ্রামীণ আবহ।
খাওয়া-দাওয়ার আয়োজনও চলেছে বেশ কয়েকদিন ধরেই। নিজের হাতে রান্নাও করেছেন তিনি। মেনুতে ছিল—ইলিশ মাছের লেজ দিয়ে ভর্তা, লাল চালের পান্তা, শুঁটকি ভর্তা, নারকেল ভর্তা, আম ডাল, আর ডেজার্টে ছিল ঘরে তৈরি রসগোল্লা। জয়া বলেন, “নববর্ষে পান্তা-ইলিশ তো হবেই। আর সেটা যদি হয় শুকনো লঙ্কা, পেঁয়াজ দিয়ে মাখানো—তাহলেই জমে যায়!”
রমনার শোভাযাত্রা বা চারুকলা অনুষদের আয়োজনে এ বছর অংশ নিতে পারেননি বলে জানালেও তিনি বলেছেন, “এবার ঠিক করেছি গ্রামে যাব। উৎসবকে আরও বেশি করে ছড়িয়ে দিতে চাই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে।”
এভাবেই এবারের বাংলা নববর্ষ উদযাপন করছেন জয়া আহসান—নিজের মতো করে, আপন সংস্কৃতিকে আরও গভীরভাবে ছুঁয়ে।