নব্বইয়ের দশকের শুরুটা ছিল বাংলাদেশের টেলিভিশন নাটকের এক স্বর্ণালি যুগ। সেই সময় যাঁরা ছোট পর্দায় অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই এক ছবিতে ধরা পড়েছিলেন এক অপূর্ব মুহূর্তে—একসঙ্গে, একসাথে, একস্মৃতিতে।
ছবিটিতে ছিলেন—
- মুনীরা বেগম মেমী, যিনি তখন তরুণ প্রজন্মের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী;
- সালাউদ্দিন লাভলু, তখনও পরিচালক হিসেবে সুপরিচিত না হলেও অভিনয় দিয়ে নজর কাড়ছিলেন;
- আজিজুল হাকিম, যার চোখেমুখে তখনকার নাটকে বাস্তবতার স্পর্শ মেলে;
- জাহিদ হাসান, যিনি পরে হয়ে উঠবেন বাংলা নাটকের অন্যতম জীবন্ত প্রতীক;
- তৌকীর আহমেদ, অভিনয়ে, পরে নির্মাণেও, যিনি দারুণ স্বাতন্ত্র্য নিয়ে এসেছেন;
- শহীদুজ্জামান সেলিম, মঞ্চ ও টিভির দুই অঙ্গনে সমান দক্ষতায় উজ্জ্বল;
- and ফটোগ্রাফার রফিকুর রহমান রেকু, যার ক্যামেরার ঝুলন্ত অবস্থান বলে দেয়, তিনি ছিলেন শুধু মুহূর্তের গ্রাহক নন—সেই জমানার ইতিহাসের এক নির্মাতা।
ছবিটি সম্ভবত তোলা হয়েছিল ঢাকার সাপ্তাহিক বিচিত্রার অফিসের সামনে—সেই সময়ের অন্যতম প্রভাবশালী একটি সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ম্যাগাজিনের প্রাঙ্গণে। এটি হয়তো কোনো নাটকের প্রচারণা, রিহার্সাল বা সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতার ফাঁকে তোলা হয়েছিল। ছবির আবহ এমন যে, কারো পোশাক, কারো হাসি, কারো ভঙ্গিমা—সব কিছুতে ফুটে উঠেছে সেই সময়ের সারল্য ও সৃজনশীলতার মিশ্রণ.
নব্বইয়ের দশকে নাটক মানেই ছিল সাহিত্যনির্ভর গল্প, বাস্তব চরিত্র আর চমৎকার অভিনয়। তখনকার নাটকগুলো শুধু বিনোদন ছিল না, ছিল সমাজ ও সম্পর্কের আয়না.
এই ছবিতে থাকা চারজন অভিনেতাই সেই সময়ের টিভি নাটকের প্রতিনিধি—তাঁদের কর্ম, ভাবনা ও আবেগে তৈরি হয়েছিল আমাদের নাটকের একটা গৌরবময় অধ্যায়।
আজ যখন আমরা তাকাই এইসব ছবির দিকে, মনে হয় সময় যেন একটুখানি থেমে যায়। সাদা-কালো নয়, রঙিন নয়—এই ছবিগুলো জীবনের। তারা জানান দেয়, শিল্প একদিন শুধু নাটকেই থাকে না, ছড়িয়ে পড়ে মানুষের স্মৃতি, সংস্কৃতি আর ইতিহাসে।