রিপন মারমা, কাপ্তাই (রাঙামাটি):
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মাননীয় উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, “বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার কথা বিবেচনায় নিয়ে কর্ণফুলী পেপার মিল (কেপিএম)-কে কিভাবে নতুনভাবে কাজে লাগানো যায়, সে বিষয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করছি।”
শুক্রবার (২৭ জুন) দুপুর আড়াইটায় রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনায় অবস্থিত বিসিআইসির কাগজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কেপিএম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, “এই মিলটি সরকারি মালিকানায় থাকবে, নাকি ব্যক্তিমালিকানায় পরিচালিত হবে, সে সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ২০২২ সালে মিলটি নিয়ে যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে, তার যৌক্তিকতা নিয়েও আমরা আজকে পর্যবেক্ষণ করছি। বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় স্বল্প সময়ে দেশের শিল্পগুলোকে কার্যকরভাবে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়ানোই আমাদের লক্ষ্য।”
মিলের যন্ত্রপাতি সম্পর্কে তিনি বলেন, “বর্তমান যন্ত্রপাতি দিয়ে আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া কঠিন। যেহেতু এখানে আর্থিক বিষয় জড়িত, তাই ব্যবহারিক (প্র্যাকটিক্যাল) দিক বিবেচনা করেই পরিকল্পনা নিতে হবে।”
কাগজ আমদানির বিষয়ে তিনি বলেন, “দেশে কাগজের চাহিদা অনেক। বিদেশ থেকে আমদানি না করে দেশেই উৎপাদন বাড়াতে হবে। কেপিএমের অনেক জায়গা রয়েছে। বিদেশি কেমিকেলের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে দেশের কাঁচামাল ব্যবহার করে উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে হবে।”
এর আগে তিনি দুপুর ১২টায় কেপিএম গেস্ট হাউজে মিলের বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সভার শুরুতে কেপিএম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহীদ উল্লাহ স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন পরিকল্পনার প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনায় পাল্প উৎপাদন এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি মেরামত ও প্রতিস্থাপনের জন্য ১২০ কোটি টাকা প্রয়োজন। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় একটি নতুন আধুনিক পেপার মিল স্থাপন করা জরুরি।”
এসময় উপস্থিত ছিলেন—শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব ওবায়দুর রহমান, বিসিআইসির চেয়ারম্যান মো. ফজলুর রহমান, কেপিএম লিমিটেডের এমডি শহীদ উল্লাহ, রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন, কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন, কেপিএম সিবিএ সভাপতি আব্দুল রাজ্জাকসহ প্রতিষ্ঠানটির বিভাগীয় প্রধান ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
সরকারি পর্যবেক্ষণে কেপিএমের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে দেশের কাগজ শিল্পে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।