শরীয়তপুর প্রতিনিধি :
পদ্মা নদীর ভাঙনে একসময় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পালেরচর ইউনিয়নের একটি চর আবারও জেগে উঠেছে। সেই নতুন চরেই গত কয়েক বছরে গড়ে উঠেছে একটি নতুন জনপদ—প্রায় তিন শতাধিক পরিবার গড়েছে ঘরবাড়ি, শুরু করেছে কৃষিকাজ ও জীবিকা।
তবে এই নতুন জীবনের ওপর নেমে এসেছে অনিশ্চয়তার ছায়া। স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকার ওই চরকে খাসজমি হিসেবে ঘোষণা করে সেখানে একটি বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। ফলে হঠাৎ করেই উচ্ছেদের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয়রা।
সোমবার (২ জুন) বিকেলে প্রায় দুই শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু চরটিতে মানববন্ধনে অংশ নেন। তাঁদের দাবি—উচ্ছেদের আগে পুনর্বাসনের সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মানববন্ধনে “উচ্ছেদ নয়, পুনর্বাসন চাই”, “এই জমি আমাদের” লেখা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কাশেম মোল্লা বলেন, “নিজ হাতে ঘর গড়েছি, নদীতে সব হারিয়ে এখানে নতুন করে বাঁচতে শিখেছি। সরকার যদি উন্নয়ন করতেই চায়, তাহলে আমাদের বিকল্প জায়গা দিয়ে করুক। হঠাৎ উচ্ছেদ অন্যায়।”
একই দাবি জানান রাবেয়া বেগমও, “পানি আর ভাঙনের সঙ্গে লড়েই তো জীবন কেটেছে। এখন একটু স্থিরভাবে বাঁচতে চাইলেই যদি তাড়িয়ে দেয়, যাব কোথায়?”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাবেরী রায় বলেন, “পদ্মার জেগে ওঠা চরে একটি সরকারি বিনোদন পার্ক গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। ডিসি স্যার নিজে এলাকা পরিদর্শন করেছেন। মানববন্ধনের বিষয়ে আমি অবগত নই।”
এলাকাবাসীদের দাবি, সরকার চাইলে অন্যত্র বিনোদনকেন্দ্র করতে পারে, তবে গড়ে ওঠা একটি বাস্তব জনপদ ধ্বংস করে নয়। তাদের ভাষায়, “এটা শুধু উন্নয়ন নয়, মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার রক্ষার বিষয়।”