Satyajit Das (Moulvibazar Correspondent):
মৌলভীবাজার শহরে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে সৃষ্টি হয়েছে চরম জলাবদ্ধতা। শহরের প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলি,বাজার থেকে বাসাবাড়ি-সবখানেই ঢুকে পড়েছে পানি। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা,ব্যবসায়ী ও পথচারীরা।
রবিবার (১ জুন) সকাল থেকে শুরু হওয়া গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির পর বিকেল থেকে নামে প্রবল বর্ষণ। এতে শহরের পূর্ব গির্জাপাড়া,শান্তিবাগ স্কুল রোড, সৈয়দ মুজতবা আলী সড়ক,কাশীনাথ রোড,টিবি হাসপাতাল রোডসহ একাধিক এলাকায় হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি জমে যায়। অনেক নিচু এলাকার বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে,মৌলভীবাজার শহরের দীর্ঘদিনের অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা,নালার অব্যবস্থাপনা,অপরিচ্ছন্নতা ও কোদালীছড়ার নিচু বাঁধ এই জলাবদ্ধতার মূল কারণ।
শহরের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ কোদালীছড়া। কিন্তু ছড়ার বিভিন্ন স্থানে বর্ষা মৌসুমেও সেচের জন্য বাঁধ থাকায় পানি স্বাভাবিকভাবে প্রবাহিত হতে পারে না। ফলে শহরের অভ্যন্তরীণ পানি আটকে গিয়ে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা।
এ ছাড়া শহরের নালাগুলোতে পলিথিন,প্লাস্টিক ও বাসাবাড়ির বর্জ্য ফেলার কারণে সেগুলো দ্রুত বন্ধ হয়ে যায়। ড্রেন পরিষ্কারের অভাবেও পানি দ্রুত সরে যেতে পারে না।
এম সাইফুর রহমান সড়ক,পূর্ব গির্জাপাড়া, শান্তিবাগ,টিবি হাসপাতাল রোড,পশ্চিমবাজারসহ শহরের বহু এলাকায় পানিতে তলিয়ে গেছে সড়ক। পূর্ব গির্জাপাড়ার বেশ কয়েকটি বাসাবাড়ি ও দোকানে পানি ঢুকে ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্থানীয়রা। অনেক পরিবারকে নিজেদের ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হয়েছে।
এক সময় মৌলভীবাজার শহরের ফাটাবিল ছিল প্রাকৃতিক জলাধার,যা আশপাশের পানি ধারণে সহায়তা করত। এখন সেই বিল ভরাট করে গড়ে উঠেছে আবাসিক এলাকা। ফলে বৃষ্টির পানি জমা রাখার আর কোনো জায়গা থাকছে না।
শহরের পরিকল্পনাবিদদের মতে,জলাধার রক্ষা ও সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ছাড়া এই সংকট থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন। বর্ষার শুরুতেই এমন জলাবদ্ধতা শহরের অব্যবস্থাপনা ও অপরিকল্পিত উন্নয়নের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরছে।
স্থানীয়রা বলছেন,প্রতি বছর একই চিত্রের পুনরাবৃত্তি হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। এখনই ড্রেনেজ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও কোদালীছড়া অবমুক্ত করার উদ্যোগ না নেওয়া হলে,সামনে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে।