বিধান মন্ডল, ফরিদপুর থেকে:
ফরিদপুরের সালথার দিনমজুর পরিবারের ছেলে নাজমুল মৃধা বাঁচতে চায়। একসময় পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া এই মেধাবী ছাত্র স্বপ্ন দেখত উচ্চশিক্ষা নিয়ে পরিবারকে হাসি উপহার দেবেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আট বছর আগে গাবগাছ থেকে পড়ে তার দুটি পা ও কোমরের হাড় ভেঙে যায়। দীর্ঘ চিকিৎসার পরও পায়ে দেখা দেওয়া ক্ষত আর ভালো হয়নি। পরে ধীরে ধীরে সেটিই ক্যান্সারে রূপ নেয়।
বর্তমানে ১৯ বছর বয়সী নাজমুলের পায়ের ৬০ শতাংশ পঁচে গেছে। চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে গিয়ে তার পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। প্রতিমাসে প্রয়োজন হয় ৩২ ব্যাগ বি-পজিটিভ রক্ত। প্রতিবার রক্ত সংগ্রহে লাগে ৫০০-৭০০ টাকা। টাকার অভাবে চিকিৎসা চলছে না, এমনকি নিয়মিত ওষুধও নিতে পারছেন না নাজমুল।
নাজমুল বলেন,
“আমার স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া করে পরিবারকে সুখ দেব। কিন্তু এখন আমি শুধু বাঁচতে চাই। সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে আমি সাহায্য চাই।”
নাজমুলের বাবা লাল মৃধা জানান,
“ছেলেটা খুব মেধাবী ছিল। প্রতিবেশীদের প্রাইভেট পড়াত। এখন সে শুয়ে কাতরাচ্ছে। যা কিছু ছিল বিক্রি করেছি চিকিৎসার পেছনে। কিন্তু কিছুতেই ভালো করতে পারলাম না। এখন সরকারের সাহায্য ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।”
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নাজমুল একটি টিনের ঘরের অন্ধকার কোণে কাতরাচ্ছে। ক্ষত থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। অবস্থা এতটাই সংকটজনক যে উন্নত চিকিৎসা ছাড়া জীবন বাঁচানো প্রায় অসম্ভব।
সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন,
“নাজমুলের পরিবার আবেদন করলে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হবে।”