Staff Correspondent:
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সহিংস হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলায় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (৩১ মে) রাতে উপজেলার দামোদরপুর এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম জালাল উদ্দীন (৬০)। তিনি বুলাকিপুর ইউনিয়নের দামোদরপুর শৌলা গ্রামের বাসিন্দা এবং সাংগঠনিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের ঘোড়াঘাট উপজেলার ১ নম্বর বুলাকিপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত বছরের ৪ আগস্ট ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার বাসস্ট্যান্ডে অনুষ্ঠিত এক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাবেশে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় জালাল উদ্দীনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। তদন্ত শেষে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঘটনাপ্রবাহ:
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট বিকেলে ঘোড়াঘাটের চারমাথা মোড়ে চলমান ছাত্র আন্দোলনে লাঠি, রড, ছুরি, রামদা এবং পেট্রোল বোমা নিয়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এতে বহু সাধারণ শিক্ষার্থী ও পথচারী আহত হন।
মামলার বাদী সহিদ শেখ এবং তার সঙ্গী মো. রাফিক গুরুতর আহত হন। হামলাকারীরা দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করে যানবাহন ভাঙচুর করে, যার ফলে আনুমানিক ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। এছাড়াও স্থানীয় এক ব্যক্তির গ্যারেজে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দুটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়, যার বাজারমূল্য ছিল প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা.
মামলা ও পরবর্তী পদক্ষেপ:
২০২৪ সালের ২৪ আগস্ট সহিদ শেখ নামের একজন ছাত্রদল কর্মী বাদী হয়ে ঘোড়াঘাট থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, পৌর কাউন্সিলর ও ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৪০ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং আরও ৭০ থেকে ৮০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
ওসি নাজমুল হক জানান, “তদন্ত শেষে প্রমাণিত হওয়ায় জালাল উদ্দীনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রবিবার সকালে তাকে দিনাজপুর আদালতে পাঠানো হবে।”
ঘটনাটি ঘোড়াঘাটসহ আশপাশের এলাকায় নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মামলার অন্যান্য আসামিদের খুঁজে বের করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।