রাজু রহমান,যশোর জেলা প্রতিনিধি:
যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবিরুল হক সাবু বলেন, শার্শা উপজেলা বিএনপির কর্মীদের শুধরানোর আগে নেতাদের শুধরাতে হবে। গতকাল শার্শা উপজেলা বিএনপির আয়োজনে শার্শা অডিটরিয়ামে এক মতবিনিময়, আলোচনা সভা, দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
শার্শা উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি আবুল হাসান জহির এর সভাপতিতে বুধবার বেলা তিনটায় এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবিরুল হক সাবু, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, যশোর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার রবিউল ইসলাম, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি,উপজেলা বিএনপি’র প্রধান উপদেষ্টা আলহাজ্ব খাইরুজ্জামান মধু, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নুরুজ্জামান লিটন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোস্তফা কামাল মিন্টু, উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব আশরাফুল ইসলাম বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দিন আহম্মদ সহ উপজেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির ১০১ জন সদস্য মন্ডলী।
মতবিনিময় সভার শুরুতেই উন্মুক্ত আলোচনায় উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ উপজেলা বিএনপি’র বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা, সমালোচনা ও পর্যালোচনা করেন,এসময় বিভিন্ন নেতৃবৃন্দর আলোচনায় আক্ষেপের সুর বেজে উঠে। তারা বলেন অ-ব্যবস্থাপনায় চলছে উপজেলা বিএনপি। কোন সুশৃংখল বিএনপি শার্শায় নেই। সকলকে সচেতন হতে হবে কর্মীদেরকে সাবধান করতে হবে এবং দলকে সুসংগঠিত করতে হবে। এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দিলে চলবে না।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, শার্শা উপজেলা বিএনপি নিয়ে আমরা শংকিত। এখনো বোমার আওয়াজে সকালে মানুষের ঘুম ভাঙ্গে। এটা ভালো কথা নয় শার্শা উপজেলা বিএনপিকে সাবধান করে দিয়ে তিনি বলেন, নিজের ব্যক্তিগত আখের গুছানোর জন্য ইচ্ছামতো নিজের মানুষদের কমিটিতে আনা হয়েছে। অযোগ্য ব্যক্তিদেরকে কমিটিতে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। যারা দলের জন্য কাজ করেছে, যারা সৎ, আদর্শের রাজনীতি করতে চাই তাদেরকে দূরে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন,প্রত্যেক ইউনিয়নে একাধিক অফিস তৈরি করা হয়েছে যেটা শালীর, বিচার ও আর্থিক লেনদেনের কেন্দ্রস্থল হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। যশোর জেলা বিএনপির নির্দেশে এখন থেকে প্রত্যেক ইউনিয়নে একটি করে বিএনপির অফিস থাকবে বাকি সকল অফিস তিনি বন্ধ ঘোষণা করেন। আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন ৫ আগস্ট এর আগে শার্শা উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ নিরাপদ থাকার জন্য যশোর, খুলনা ঢাকায় গিয়ে মিছিল, মিটিং করলেও নিজের থানায় কিছুই করতে পারেনি। অথচ ৫ আগস্ট এর পরে অনেকেরই ঢাকায় ফ্ল্যাট হয়েছে। অনেকের গাড়ি বাড়ি হয়েছে। এগুলো থেকে দূরে সরে আসতে হবে।

তিনি বলেন আগামী নির্বাচন সহজ হবে না। নির্বাচনে আমাদের জয়লাভ করতে হলে এখন থেকে দলকে সু সংগঠিত করতে হবে, তা নাহলে পরাজয় বরণ করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না। প্রধান অতিথি বলেন, ঈদের পরে আমরা শার্শার ১১ টি ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দদের নিয়ে আলাদা আলাদা বৈঠক করবো আলোচনা করে সুরাহা করবো। নিজেদের ভিতরে কোন দলীয় কোন্দল রাখা ঠিক হবে না। যারা দলের জন্য কাজ করে তাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। যে সমস্ত নেতাকর্মীরা দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে তাদের প্রয়োজনের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখনো আরাম করে ঘরে ঘুমাচ্ছে, রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা কোন ব্যবস্থা না নিতে পারলেও নিজেরা নিজেদের সাথে সংঘর্ষের লিপ্ত হচ্ছি। নিজেরা নিজেদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিডিয়ায় অপপ্রচার চালাচ্ছি, এতে আমরা নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি,বিএনপি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। কাজেই আমাদের নিজেদের বিরুদ্ধে নয় বরং আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সচেতন হতে হবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হাসান জহির সমাপনী বক্তব্যে বলেন, দলের ভিতর ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হচ্ছে, যে কারণেই নেতাকর্মীরা উৎশৃংখল হয়ে পড়ছে। আমাদের সকলকে এক হয়ে কাজ করতে হবে এবং নেতাকর্মীদের কে অসৎ পথ থেকে ফিরিয়ে এনে দলের জন্য, আগামী নির্বাচনের জন্য কাজ করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। পরে তিনি দোয়া অনুষ্ঠান ও ইফতার বিতরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্তি ঘোষনা করেন।