সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি:
সরিষাবাড়ীতে সরকারি জলমহাল দখল ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উপজেলা বিএনপির জরুরি সভায় মহাদান ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সকল কমিটি এবং সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
রবিবার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। এর আগে, শনিবার (২২ মার্চ) সকালে দলটির জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সংঘর্ষের পেছনের কারণ
স্থানীয় সূত্র জানায়, মহাদান ইউনিয়নের সেঙ্গুয়া গ্রামের সরকারি জলমহাল ‘তালতলা দহ’ দখল ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এই বিরোধের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল আওয়াল এবং সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার-উস-সাদাত লাঞ্জু।
এ নিয়ে পূর্বেও বেশ কয়েকবার সংঘর্ষ, হামলা ও দলীয় বহিষ্কারের ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ও শুক্রবার (২১ মার্চ) দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে। এতে বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মোটরসাইকেল ও মাছ ধরার নৌকা ভাঙচুর করা হয়। পাশাপাশি জালে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং লুটপাটের ঘটনাও ঘটে।
সংঘর্ষের সময় দেশীয় অস্ত্রের মহড়া এবং হামলার ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলেছে।
দলীয় সিদ্ধান্ত
সংঘর্ষের ফলে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয় এবং দলীয় ইমেজ সংকট সৃষ্টি হয়। এমন পরিস্থিতিতে উপজেলা বিএনপির জরুরি সভায় মহাদান ইউনিয়নের বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল কমিটি ও সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম বলেন, “দলের জরুরি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মহাদান ইউনিয়ন বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল কমিটি ও কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হলো। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে।”
এই ঘটনার পর এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।