ক্ষেতলাল জয়পুরহাট সংবাদদাতা:
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার আলামপুর ইউনিয়নের ফোপড়া গ্রামে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপির পার্টি অফিসে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে ফুলদিঘী বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম গুরুতর আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানায়, ঘটনার সূত্রপাত হয় গত পহেলা মাঘ মাসে ফোপড়া গ্রামে একটি উরস মাহফিলে। সেখানে নশিপুর গ্রামের নাঈম সহ কয়েকজন আগত অতিথির সঙ্গে বিরোধ হয়। খড়ের পোয়ালে আগুন লাগানো ও মারধরের ঘটনার জেরে বৈশাখী মেলা উপলক্ষে আবার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ফোপড়া গ্রামের কয়েকজন কিশোর ও বিএনপি নেতাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে মিলনের নেতৃত্বে গতকাল বিকালে ফুলদিঘী বাজারে শহিদুল ইসলামের উপর হামলা চালানো হয়।
স্থানীয়রা জানান, মিলন বিএনপি’র পার্টি অফিসে গিয়ে প্রথমে শহিদুল ইসলামের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে তারা পার্টি অফিসে ভাঙচুর চালিয়ে শহিদুলকে বেদম মারধর করে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিএনপি নেতাকর্মীরা তাৎক্ষণিক বাজারে জড়ো হলে উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদুল মাসুদ আঞ্জুমান কর্মীদের ফিরিয়ে নিয়ে যান।
তবে রাত সাড়ে ৮টার দিকে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। অভিযোগ রয়েছে, নশিপুর গ্রামের কিছু লোক ফোপড়া গ্রামে গিয়ে দুটি বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এই সময় চঞ্চল ও মিলনের বসতবাড়ির টিনসেড ও চুলার পাশে কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়।
মিলনের স্ত্রী সুবর্ণা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, পূর্বশত্রুতার জের ধরে আলামপুর ইউপির বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদুল ইসলামের লোকজন আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তিন ভরি স্বর্ণালংকার ও দুটি বিদেশি গরু লুট করে নিয়ে যায়। পরে গরু দুটি পাওয়া গেলেও স্বর্ণালংকার ফেরত পাওয়া যায়নি। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি চাই।”
এ বিষয়ে মিলন বলেন, “আমার গ্রামের ছেলেদের উপর নশিপুরে হামলা চালানো হয়। আমি কেবল শহিদুল ভাইয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়েছিলাম। কিন্তু উনি উত্তেজিত হয়ে আমাদের ওপর চড়াও হন এবং নিজের পাঞ্জাবি ছিঁড়ে আমাদের ফাঁসাতে চায়। আমরা কোনো পাটি অফিস ভাঙচুর করিনি।”
গুরুতর আহত বিএনপি নেতা শহীদুল ইসলামের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন৷ ছোট ছোট বাচ্চারা পহেলা বৈশাখের মেলায় তাদের হাতাহাতি হয়েছে তাদের উভয়কে ডেকে, আমি মীমাংসা করে দিয়েছি৷ গতকাল বিকেলে মিলনের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন ব্যক্তি আমার বিএনপির পার্টি অফিসে এসে৷ মিলন বলে আমাদের ছেলেকে কেনো মারধর করা হলো এই মর্মে আমাকে পান্জা করে তুলে বেধড়ক মারপিট করে রাস্তায় ফেলে দেয় স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়েছেন৷
ঘটনার পরপরই ক্ষেতলাল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরবর্তীতে আরও সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনার তদন্ত চলছে ভুক্তভোগীর অভিযোগ পেলে, আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷