Habiganj Correspondent :
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের জনতার বাজারে প্রতি শনিবার বসছে অবৈধ পশুর হাট, যেখানে চলছে কোটি টাকার বাণিজ্য। জেলা প্রশাসনের লিখিত নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বন্ধ হয়নি হাটটি। বরং রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে একটি প্রভাবশালী চক্র, যারা ‘প্রত্যায়ন’ নামে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আদায় করছে মোটা অঙ্কের অর্থ, কোনো সরকারি অনুমোদন ছাড়াই।
নিষেধাজ্ঞা ছিল স্পষ্ট, তবুও চলছে হাট
গত ৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মো. ফরিদুর রহমান নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জনতার বাজার পশুর হাট বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর ৩১ জানুয়ারি হাট নিষিদ্ধ করে সরকারি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি জারি হয়, যেখানে উল্লেখ ছিল, অনুমোদনহীনভাবে হাট পরিচালনা করলে হাট-বাজার আইন ২০২৩ এবং মহাসড়ক আইন ২০২১ অনুযায়ী কারাদণ্ড ও জরিমানার বিধান রয়েছে।
৪ মাসে ১৫ বার হাট বসেছে, লেনদেন কোটি টাকার
তবে বাস্তবে এই নির্দেশনাগুলো কার্যকর হয়নি। গত চার মাসে কমপক্ষে ১৫ বার জনতার বাজারে অবৈধভাবে পশুর হাট বসানো হয়েছে। প্রতি হাটে গরু-ছাগল বিক্রয়ের সময় ১ থেকে দেড় হাজার টাকা করে ‘প্রত্যায়ন ফি’ আদায় করা হয়, যার কোনো বৈধতা নেই। স্থানীয় সূত্র মতে, প্রতি হাটে প্রায় ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় হয়, ফলে ইতোমধ্যেই কোটি টাকারও বেশি অবৈধ লেনদেন হয়েছে।
রাজনৈতিক ছত্রছায়া ও প্রশাসনের নিরবতা
এ অবৈধ হাট পরিচালনার পেছনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের প্রভাবশালী একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। একই সঙ্গে, প্রশাসনের রহস্যজনক নিরবতা ও পদক্ষেপহীনতা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
এক পশু বিক্রেতা বলেন,
“গরু বিক্রির সময় জোর করে প্রত্যায়ন ফি আদায় করা হয়। কোনো সরকারি রশিদ নেই। টাকা সব চলে যায় ব্যক্তির পকেটে।”
ইউএনও বললেন…
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন Said,
“আমাদের পক্ষ থেকে কোনো খাস কালেকশন করা হচ্ছে না। এরপরও কেউ যদি রশিদের মাধ্যমে অর্থ আদায় করে, তাহলে তা আইনগতভাবে দণ্ডনীয় অপরাধ।”
জনমনে ক্ষোভ ও প্রশ্ন
স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা বলছেন,
“এ হাট যেহেতু অনুমোদনহীন, তাই কোনো রশিদ বা প্রত্যয়নপত্রের বৈধতা নেই। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা এই অবৈধ বাণিজ্যকে উৎসাহ দিচ্ছে।”
✅ Conclusion
জনতার বাজার পশুর হাট এখন আইন অমান্য, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন ও অবৈধ অর্থ লেনদেনের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধিই হতে পারে এ দুর্নীতির একমাত্র প্রতিকার।