Shahjahan Ali Manon, Nilphamari District Representative:
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় মাটি কাটার প্রকল্পে নাম অন্তর্ভুক্ত করতে জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা করে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও সদস্যদের বিরুদ্ধে।
এ নিয়ে সোমবার (১২ মে) দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে শতাধিক নারী-পুরুষ মানববন্ধনে অংশ নিয়ে দুর্নীতির প্রতিবাদ ও জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান।
ভুক্তভোগী মোছা. সাথী অভিযোগ করে বলেন, “আমি প্রকল্পের সুবিধাভোগী হিসেবে ২ বছর কাজ করেছি। এখনও ৩ বছর বাকি থাকলেও নতুন করে অনলাইনে আবেদন করতে বলা হচ্ছে। মহিলা মেম্বার বলেছেন, ৫ হাজার টাকা দিলে নাম থাকবে, না দিলে বাদ।”
৮ নম্বর ওয়ার্ডের আফসার আলী বলেন, “আমার স্ত্রীর নামে কার্ড করে তিন কিস্তিতে প্রায় ৪৮ হাজার টাকা তুলে নিয়েছে মেম্বার মেরিনা ও তার স্বামী ফজলার রহমান। সাংবাদিকের মাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ হলে বাধ্য হয়ে কার্ড ফিরিয়ে দেয়, এখন হুমকি দিচ্ছে বাতিলের।”
৫ নম্বর ওয়ার্ডের রেনু বালাও একই অভিযোগ করে বলেন, “সচিব নিজেই বলেছেন, টাকা দিলে ১৫-২০টি কার্ড অনলাইনে করে দিতে পারেন।”
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রকৃত দরিদ্রদের বাদ দিয়ে স্বচ্ছল ব্যক্তিদের নাম তোলা হচ্ছে শুধুমাত্র ঘুষের বিনিময়ে। কেউ কেউ হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায়েরও অভিযোগ তুলেছেন।
মাটিকাটা দলের স্থানীয় সর্দার নজিবুর রহমান বলেন, “হালনাগাদ করার নাম করে পুরাতন সবাইকে বাদ দিয়ে নতুন করে আবেদন করতে বলা হয়েছে। এটি অনৈতিক। এতে দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হচ্ছে।”
একই অভিযোগ তোলেন অন্য সর্দার বিকাশ চন্দ্র রায়ও। তিনি বলেন, “এটি গরীবদের হক নষ্ট করার চেষ্টা। টাকা দিয়ে তালিকাভুক্ত হচ্ছে আর গরীবরা বাদ পড়ছে।”
১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বাররা অভিযোগ করেন, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান তার এলাকা ৭, ৮ ও ৯ নম্বরে বেশি সুবিধা দিয়েছেন। এখন রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে তারা নিজের এলাকায় কাজ করাতে চান। তবে তারা টাকা নেওয়ার অভিযোগে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সংরক্ষিত নারী মেম্বার মেরিনা ও তার স্বামী অভিযোগ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে চাননি এবং সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান। ফোনেও তারা কল রিসিভ করেননি।
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া:
ইউপি সচিব রহিদুল ইসলাম বলেন, “সবাইকে নতুন করে অনলাইনে আবেদন করতে বলা হয়েছে। কারও নাম বাদ দেওয়া হয়নি। টাকা চাওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন, কেউ প্রমাণ দিতে পারবে না।”
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. লুৎফর রহমান বলেন, “ইউএনও মহোদয়ের নির্দেশে হালনাগাদ চলছে। অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। টাকা নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা হবে।”