জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁঃ মো. হাবিবুর রহমান:
নওগাঁ সদর উপজেলার বলিহার দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বুধবার (২৮ মে) সকাল ১১টার দিকে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এই তদন্ত শুরু করেন।
এর আগে গত ১৪ মে এলাকাবাসীর পক্ষে শিক্ষানুরাগী জাহাঙ্গীর আলম জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০১১ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর থেকেই আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। বিদ্যালয়ের বার্ষিক আয় ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা হলেও অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষার মানোন্নয়ন কিংবা খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক চর্চার কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শ্রেণিকক্ষে ময়লার স্তূপ, ভাঙা জানালার কাচ, ব্যবহার অনুপযোগী টয়লেট এবং মেয়েদের কমনরুমে নাইটগার্ডের অবস্থানসহ নানা অনিয়ম বিরাজ করছে। বিদ্যালয়ের একটি ল্যাবে ল্যাপটপ থাকলেও সেগুলো দীর্ঘদিন অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের ল্যাবে বসার তেমন সুযোগ নেই, খেলাধুলার কোনো উপকরণ নেই, আর বিদ্যালয়ের পরিবেশ চরম অব্যবস্থাপনায় ভরা।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে প্রায় ৪৭ লাখ টাকার বিনিময়ে অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্য করা হয়েছে, যার কোনো অর্থ বিদ্যালয় উন্নয়ন খাতে জমা দেওয়া হয়নি। এছাড়া গত ১২ বছরে বিদ্যালয়ের আয় প্রায় ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা হলেও সেটির সঠিক হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয়দের দাবি, প্রধান শিক্ষক ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন, বিদ্যালয়ের পুকুর গোপনে লিজ দিয়েছেন এবং গাছ কেটে বিক্রি করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মো. আফজাল হোসেন বলেন, “কমিটি গঠন সংক্রান্ত বিরোধের কারণে একটি পক্ষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।”
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাহফুজুল আলম বলেন, “তদন্ত চলছে, এখনই কিছু বলা ঠিক হবে না।”
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. ওয়াসিউর রহমান বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রমাণ মিললে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”