পঞ্চাশ বছরের পুরনো জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভেঙে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগ—রাজস্ব নীতি বিভাগ O রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ—গঠনের ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই কাঠামোগত সংস্কারের লক্ষ্য হলো রাজস্ব নীতিনির্ধারণ এবং তা বাস্তবায়নের কার্যক্রমকে পৃথক করা, যাতে রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বৃদ্ধি, স্বার্থের দ্বন্দ্ব দূর এবং করের আওতা প্রসারিত করা যায়।
বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত বর্তমানে মাত্র ৭.৪ শতাংশ, যা এশিয়ার অন্যতম সর্বনিম্ন। এই অনুপাতকে ১০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যে এনবিআর পুনর্গঠনকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বহুদিন ধরেই এনবিআর ভেতরে স্বার্থের দ্বন্দ্ব, কর আদায়ে অদক্ষতা, দুর্বল শাসনব্যবস্থা, এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে সমালোচিত ছিল। একই প্রতিষ্ঠানের হাতে কর নীতিনির্ধারণ ও তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব থাকায় জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা বারবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
পুনর্গঠনের ফলে যেসব পরিবর্তন আসবে:
- দায়িত্বের স্পষ্ট বিভাজন: রাজস্ব নীতি বিভাগ আইন প্রণয়ন, হার নির্ধারণ ও আন্তর্জাতিক চুক্তি দেখবে; রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ দেখবে আদায় ও বাস্তবায়ন।
- দক্ষতা বৃদ্ধি: প্রতিটি বিভাগ নিজ নিজ লক্ষ্যে মনোযোগী হতে পারবে, ফলে দক্ষতা ও স্বচ্ছতা বাড়বে।
- কর ব্যবস্থার উন্নয়ন: প্রত্যক্ষ করকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি পরোক্ষ কর নির্ভরতা কমানো হবে।
- আস্থা বৃদ্ধি: স্বচ্ছ ও নির্ভরযোগ্য কর প্রশাসনের মাধ্যমে দেশি–বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরবে।
সরকার জানিয়েছে, এটি কেবল একটি প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস নয়, বরং ন্যায্য, উন্নয়নমুখী এবং আধুনিক কর ব্যবস্থার ভিত্তি তৈরির একটি সাহসী পদক্ষেপ।
নতুন কাঠামোর মাধ্যমে রাজস্ব প্রশাসনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার সুযোগ তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
4o