অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, দেশের প্রায় ১৮ শতাংশ মানুষ এখনও দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে। গত তিন বছরে মুদ্রাস্ফীতি ৩০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের আয়ের প্রতি চাপ বেড়েছে এবং অনেকেই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির মেরুল বাড্ডা ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত “ইকোনোমিক রেজিলিয়েন্স অফ বাংলাদেশ: রোল অফ ফিসকাল ইয়ার” শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় এ বিষয়গুলো উঠে আসে। আলোচনায় অংশ নেন সিপিডি’র ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নূরুল আমিন এবং জাপান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাহী পরিচালক তাহেরা আহসান।
রাজস্ব নীতি অর্থনীতিতে সরকারের ব্যয় ও কর ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্য হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে বাংলাদেশের মাথাপিছু সামাজিক ব্যয় দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় কম, যেখানে বাংলাদেশে এই হার জিডিপির প্রায় ১৩ শতাংশ, অন্য দেশগুলোতে প্রায় ২০ শতাংশ।
অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সাম্প্রতিক জাতীয় বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিগুলো ১৪০ থেকে ৯৯টিতে কমিয়ে আনা হয়েছে। বাজেটে ৪৫ শতাংশ বরাদ্দ কৃষিভর্তুকি ও পেনশনের জন্য রাখা হয়েছে, যা প্রকৃত অর্থে সামাজিক নিরাপত্তার অংশ নয়। তাই এসব খরচ সামাজিক নিরাপত্তা খাত থেকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাবও দেন তিনি। বয়স্ক ভাতার পরিমাণ যদিও বাড়ানো হয়েছে, বর্তমান দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে তা অপ্রতুল। তিনি সামাজিক নিরাপত্তার উপকারভোগীদের তালিকা পুনর্মূল্যায়নের গুরুত্বে জোর দেন এবং আরও সমন্বিত সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থায় দেশের অগ্রগতির কথা বলেন।
মোহাম্মদ নূরুল আমিন জানান, দেশের ব্যাংকিং খাতে প্রায় ৪০ শতাংশ ঋণ এখন অনাদায়ী বা ঝুঁকিপূর্ণ। এ সমস্যা সমাধানে সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকগুলোকে একীভূত বা অধিগ্রহণের পরামর্শ দেন।
তাহেরা আহসান বলেন, সরকার বন্ডসহ বিভিন্ন আর্থিক উপকরণ দিয়ে অর্থ সংগ্রহের ফলে বেসরকারি খাতের জন্য ঋণ পাওয়া কঠিন হচ্ছে। সদ্য ঘোষিত বাজেটে বেসরকারি খাতের জন্য বিশেষ কোনো প্রণোদনা না থাকায় প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হতে পারে না। তবে অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষায় বাজেটের খরচ নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ডিপার্টমেন্ট অফ ইকোনোমিক্স অ্যান্ড সোশাল সায়েন্সেসের চেয়ারপারসন প্রফেসর ওয়াসিকুর রহমান খান স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন।