সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত-সমালোচিত এক নাম শারমিন শিলা, যিনি ‘ক্রিম আপা’ নামে পরিচিত। গায়ের রং ফরসা করার ক্রিম বিক্রির পাশাপাশি তিনি মেকআপ ও বিউটি কন্টেন্ট তৈরি করে থাকেন। তবে তার কনটেন্টগুলোতে যা দেখা যায়, তা শুধু কসমেটিকস বা বিউটির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়—বরং অনেক সময়ই তা অমানবিক পর্যায়ে পৌঁছে যায়।
ভিডিওতে দেখা গেছে, ‘ক্রিম আপা’ তার ছোট্ট মেয়েকে জোর করে মুখে খাবার দিচ্ছেন, কখনো ধমক দিচ্ছেন, আবার কখনো চড় মারছেন। ভারী কানের দুল পরিয়ে মেয়েকে সাজিয়ে ভিডিও করছেন, যেখানে মেয়েটির মুখে আতঙ্ক স্পষ্ট। কখনো চুল ন্যাড়া করে, কখনো রাসায়নিক দিয়ে চুল রং করে মেয়েকে কনটেন্টের অংশ বানানো হচ্ছে। অনেক সময় মেয়েটি হাসে, তবে তা স্বাভাবিক নয়—বরং মনে হয় ভয়ের চাপে কৃত্রিম এক প্রতিক্রিয়া।
শিশুর প্রতি এমন আচরণ দেখে সমাজের বিভিন্ন স্তরে নিন্দা ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শিশু সুরক্ষা সংগঠন ‘একাই একশো’ শারমিন শিলার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্মারকলিপি জমা দেয়। এরপর স্থানীয় মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার পক্ষ থেকে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
এসব অভিযোগের জবাবে ‘ক্রিম আপা’ কখনো লাইভে এসে ক্ষমা চেয়েছেন, আবার কখনো আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন। যদিও তিনি দাবি করেন, তার সন্তানদের তিনি কখনো নির্যাতন করেননি, বরং ভালোবেসেই এসব করেন।
তবে প্রশ্ন রয়ে যায়—ভিউ বাড়ানো আর অনলাইন আয়ের লোভে যদি এক মা নিজের সন্তানের ভয়ের মুখ, কান্না আর কষ্টকে বিনোদন বানিয়ে ফেলে, তবে সেটি নিছক কনটেন্ট নয়, বরং এক ভয়ংকর বাস্তবতা।শিশু বাচ্চাদের কথা চিন্তা করে স্থানীয় এক ব্যক্তির সহায়তায় তাঁকে বুঝিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাভার উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে আনা হয়। পরে সবাই মিলে তাঁকে বিভিন্ন বিষয়ে বোঝানো হয়। সমাজসেবা কর্মকর্তার কাজ শেষে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।