অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর ৯ মাস পেরিয়ে গেছে। এ সময়ের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নয়টি দেশ সফর করলেও কোনো পূর্ণাঙ্গ দ্বিপক্ষীয় সফর ছিল না। তবে ঈদুল আজহার পর তার যুক্তরাজ্য সফরটি ভিন্ন মাত্রা পাচ্ছে। যুক্তরাজ্য সরকার এই সফরকে “সরকারি সফর” হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে, যা রাজনৈতিক সমর্থন আদায়ের দিক থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
চারদিনের সফরে ড. ইউনূস লন্ডনে অবস্থান করবেন। এ সফরে তিনি ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস ও প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। ১২ জুন বাকিংহাম প্রাসাদে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে তার বৈঠক হবে এবং সেদিন বিকেলে সেন্ট জেমস প্রাসাদে রাজা চার্লসের হাত থেকে “কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড” গ্রহণ করবেন তিনি। এটি একটি মর্যাদাপূর্ণ সম্মাননা, যা গত বছর পেয়েছিলেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন।
প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের সঙ্গে ড. ইউনূসের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে ১১ জুন, ডাউনিং স্ট্রিটে। এ বৈঠকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ, জুলাই-আগস্টের সহিংসতার বিচার, ভবিষ্যৎ নির্বাচন ব্যবস্থা, রোহিঙ্গা সংকট এবং যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠদের অর্থপাচার ইস্যু আলোচনায় আসতে পারে। ঢাকা আশা করছে, এসব বিষয়ে তারা ব্রিটেনের রাজনৈতিক সমর্থন অর্জন করতে পারবে।
এছাড়া, ইউনূস চ্যাথাম হাউজ আয়োজিত এক নীতি সংলাপে অংশ নেবেন, যেখানে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, উন্নয়ন, মানবাধিকার ও অর্থনৈতিক সংস্কার নিয়ে আলোচনা হবে। এই সফরের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিসরে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান সুদৃঢ় করার একটি কৌশলিক চেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এদিকে ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক ৪ জুন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ড. ইউনূসের সফর ও তার সম্ভাব্য আলোচনা নিয়ে এই বৈঠকে বিশদ আলোচনা হবে। প্রধান উপদেষ্টার সফর শেষে ১৪ জুন সকালে ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।