মে মাসের শুরুতে, ১৯৭১ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার মামলায় বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিচার শুরু হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার সাক্ষাৎকারে এই তথ্য দিয়েছেন। ড. ইউনূস জানান, জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, যার ভিত্তিতে তার বিচার প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে।
এই সাক্ষাৎকারে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, ড. ইউনূস বলেন, “শেখ হাসিনার পতনের পরবর্তী ‘মধুচন্দ্রিমা’ সম্ভবত শেষ হয়ে গেছে।” তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও জনগণের অধৈর্য্য তুলে ধরে বলেন, “আসন্ন নির্বাচন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপে জনগণের মধ্যে সন্তুষ্টি রয়েছে এবং তারা এখনও সরকারকে সমর্থন জানাচ্ছে।”
রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা নিয়ে আলাপকালে, ড. ইউনূস জানান যে, বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে যাতে রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে এবং নিরাপদ পুনর্বাসন নিশ্চিত করা যায়। তিনি বলেন, “আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে বোঝাপড়া তৈরি করার চেষ্টা করছি, যাতে রোহিঙ্গারা তাদের বাড়ি ফিরে যেতে পারে।”
এছাড়া, ড. ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তার সংস্কারের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, যদি নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হয়, তবে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে, অন্যথায় আগামী বছর জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে, তিনি নিশ্চিত করেছেন যে নির্বাচন জুনের পরে আর হবে না।
অপরদিকে, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “এই সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগকেই নিতে হবে, তারা এখনো কোনো ঘোষণা দেয়নি।” পাশাপাশি, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও তার মন্তব্য ছিল, “এটা তাদের (আওয়ামী লীগ) সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে।”
শেষে, ভারত সরকারের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর জন্য বাংলাদেশ চিঠি পাঠানোর কথা উল্লেখ করে ড. ইউনূস জানান, ভারত এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তিনি বলেন, “যখন আইনি প্রক্রিয়া শুরু হবে, তখন আদালত নোটিশ পাঠাবে এবং দেখা যাবে কীভাবে তাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।”