বহুল আলোচিত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় প্রধান দুই আসামি—সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বরখাস্ত পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে মামলার আরও ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও বহাল রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশও বহাল রেখেছেন আদালত।
সোমবার (২ জুন) বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৩০ মে) মামলাটির আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য এই দিন ধার্য করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জসিম উদ্দিন সরকার, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. গিয়াসউদ্দিন গাজি, লাবনি আক্তার, তানভীর প্রধান, সুমাইয়া বিনতে আজিজ ও আসাদুল্লাহ আল গালিব।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফের মেরিন ড্রাইভের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। ওই ঘটনার পর সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
মামলাটির বিচার শেষে ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রদীপ ও লিয়াকতকে মৃত্যুদণ্ড দেন। একইসঙ্গে ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং সাতজনকে খালাস দেন আদালত। পরে নিয়ম অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্স অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি দণ্ডিত আসামিরাও আপিল করেন।
হাইকোর্ট যাদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন তারা হলেন—টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এবং বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী।
যাদের যাবজ্জীবন দণ্ড বহাল রাখা হয়েছে তারা হলেন—উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত, পুলিশ সদস্য সাগর দেব ও রুবেল শর্মা, মামলার সাক্ষী নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন এবং আয়াজ উদ্দিন।
এই রায়ের মধ্য দিয়ে চার বছর আগের বহুল আলোচিত এই হত্যা মামলার উচ্চ আদালতের পর্যায় সম্পন্ন হলো। তবে আসামিরা চাইলে এখন আপিল বিভাগে আবেদন করতে পারবেন।