সদরুল আইন
তিন দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নেওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের সামনে গিয়ে কথা বলার সময় অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের মাথায় পানির বোতল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
ঘটনা কীভাবে ঘটল?
বুধবার (১৪ মে) রাত ১০টার পর কাকরাইল মোড়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে যান উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা তার বক্তব্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। কিছুক্ষণ পর এক শিক্ষার্থী তাঁর মাথায় লক্ষ্য করে পানির বোতল ছুড়ে মারেন। এরপর আর কোনো কথা না বলে তিনি ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
‘স্যাবেটুর’ গোষ্ঠীর ইঙ্গিত উপদেষ্টার
পরবর্তীতে ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মাহফুজ আলম। তিনি বলেন,
“আমি এখানে আসার পর একটি অংশ, যাদের আমি স্যাবেটুর মনে করি, তারা আন্দোলনে ঢুকে এটিকে স্যাবোটাজ করার চেষ্টা করছে। মিডিয়ার এবং প্রশাসনের দায়িত্ব এই গোষ্ঠী এবং তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা খুঁজে বের করা।”
He also said,
“আপনারা খুঁজলে দেখবেন, একটি নির্দিষ্ট গ্রুপেরই নাম উঠে আসবে। তাদের একজনের প্রতি দীর্ঘদিন ধরে হিংসা ও অনলাইনে হিংস্রতা দেখা যাচ্ছে।”
ছাত্রদলের দুঃখ প্রকাশ
ঘটনার পর রাত ১২টার দিকে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন। তিনি বলেন,
“আমরা এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করছি। তবে সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা কোনোভাবেই এর জন্য দায়ী নন।”
তিন দফা দাবি কী ছিল?
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে তিনটি দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন:
- ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি চালু—২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর।
- প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট অনুমোদন—২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট কাটছাঁট না করে পাস করা।
- দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত শুরু—পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন দিয়ে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন।
পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, আহত বহু শিক্ষার্থী-শিক্ষক
বুধবার দুপুরে ‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি নিয়ে শিক্ষার্থীরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্য চত্বর থেকে যাত্রা শুরু করেন। কাকরাইল মসজিদের সামনে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। আন্দোলনকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে গেলে পুলিশ লাঠিপেটা করে, ছোড়ে টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান.
এই সহিংসতায় প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী আহত হন বলে আন্দোলনকারীরা দাবি করেছেন।
উপাচার্য ও শিক্ষকদের সংহতি
বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিনা শরমীনসহ কয়েকশ শিক্ষক-শিক্ষার্থী আটটি বাসে করে এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দেন।