থাইল্যান্ডে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তবে তাঁর বিদেশ যাত্রা ও নির্বিঘ্ন প্রত্যাবর্তন ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে নানা প্রশ্ন ও বিতর্ক। গত ৭ মে তিনি ব্যাংককে চিকিৎসার জন্য যাত্রা করেন এবং ৯ জুন রাতে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশে ফেরেন।
তাঁর বিদেশ যাত্রাকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার, বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাসহ চারজন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার ও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পাশাপাশি গঠিত হয় তিন উপদেষ্টার তদন্ত কমিটি। অথচ তিনি নির্বিঘ্নে ফিরেছেন এবং কোনো আইনগত বাধার মুখে পড়েননি।
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম ডয়চে ভেলেকে বলেন, “তাঁকে গ্রেপ্তারের কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই।” একই কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীও।
এর আগে, ওই ঘটনায় আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া একটি মামলার কথা উল্লেখ করে তাঁকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এখন তিনি বলছেন, তদন্তে দোষী প্রমাণিত না হলে কাউকে আটক করা হবে না।
এই দ্বৈত অবস্থান নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান বলেন, “স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দুই রকম কথায় জনমনে প্রশ্ন উঠবে।”
এদিকে, সাংবাদিক ও বিশ্লেষক মাসুদ কামালের ভাষায়, “সবটাই ছিল সাজানো নাটক। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য এটিই ছিল ছুঁতা।”
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার অবশ্য তা অস্বীকার করে বলেন, “আমরা অনেক আগে থেকেই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি করে আসছিলাম। এই ঘটনা শুধু মোমেন্টাম তৈরি করেছে।”
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচার এবং দলটির নিবন্ধন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। একই সঙ্গে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
আবদুল হামিদ বর্তমানে প্রচণ্ড অসুস্থ বলে জানা গেছে। তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত এবং ‘একটি বিশেষ জায়গায়’ অবস্থান করছেন বলে নিশ্চিত করেছেন তার ঘনিষ্ঠ একজন।
তবে তার ফিরে আসা ও এর আগে নেওয়া প্রশাসনিক পদক্ষেপ ঘিরে এখনো বহু প্রশ্নের উত্তর অনিষ্পন্ন রয়ে গেছে।