Sadrul Law:
চার দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে চলমান ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাটডাউন ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) কাকরাইলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে এ ঘোষণা দেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন।
তিনি বলেন, “আমরা কারো বিরুদ্ধে নয়, নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য এখানে এসেছি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরবো না। শিক্ষা ও পরীক্ষা কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের ওপর পুলিশ যে নির্লজ্জ হামলা চালিয়েছে, তা সম্পূর্ণ অন্যায় ও অরাজকতা। চোখের সামনে কোনো শিক্ষার্থীকে কেউ আঘাত করতে পারবে না—এই বার্তা আমরা দিতে এসেছি।”
এ সময় শত শত শিক্ষার্থী ‘আবাসন চাই, বঞ্চনা নয়’, ‘বাজেট কাটছাঁট চলবে না’, ‘হামলার বিচার চাই’—এমন নানা স্লোগানে কাকরাইল এলাকা মুখরিত করে তোলে।
প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মসজিদের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। অনেকে ক্লান্ত হয়ে পড়লেও আন্দোলন থেকে কেউ সরে দাঁড়ায়নি। অনেক শিক্ষার্থী রাস্তার ওপর রাত কাটিয়েছেন।
চার দফা দাবি
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো:
- ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি চালু।
- প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেটে কোনো কাটছাঁট না করে অনুমোদন।
- দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রকল্প একনেক সভায় পাশ ও বাস্তবায়ন।
- ১৪ মে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা।
লং মার্চে পুলিশি হামলা
গতকাল (১৪ মে) সকালে শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের অংশগ্রহণে জবির তিন দফা দাবিতে একটি লং মার্চ বের হয়। গুলিস্তান, মৎস্য ভবন হয়ে যখন মিছিল কাকরাইল মসজিদের সামনে পৌঁছে, তখন দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে পুলিশ টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও গরম পানি ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে।
এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জও করে। ঘটনায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হন।
উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ক্ষোভ
রাতের দিকে প্রধান উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ঘটনাস্থলে এসে বক্তব্য দেন। তার বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং “ভুয়া ভুয়া” স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে একজন আন্দোলনকারী তার দিকে বোতল ছুড়ে মারেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে উপদেষ্টা সেখান থেকে সরে যান।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কাকরাইল মসজিদের সামনে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক সমিতির শাটডাউন ঘোষণার পর আন্দোলনের মাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।