দীপ্র জয়, কবি নজরুল সরকারি কলেজ প্রতিনিধি:
কবি নজরুল সরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেয় ভিক্টর ক্ল্যাসিক পরিবহনের একটি বাসের হেলপার। আরেক শিক্ষার্থীকে একই বাসে চলন্ত অবস্থায়ই মারধর চালায় সেই হেলপার। এর প্রেক্ষিতে ভিক্টর ক্ল্যাসিক পরিবহনের ৩১ টি বাস জব্দ করেছে কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সকালে কবি নজরুল সরকারি কলেজের দুই শিক্ষার্থী সদরঘাট থেকে এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে ভিক্টর ক্ল্যাসিক পরিবহনের একটি বাসে চড়ে। বাসটির এয়ারপোর্ট যাওয়ার কথা থাকলেও কাকরাইল যাওয়ার পরেই বাসের হেলপার বলে দেয় বাস বাড্ডার ওপারে আর যাবে না। সাথে সাথেই বাসের সকল যাত্রী এর প্রতিবাদ করে ওঠে। বাড্ডার আসার পরে ভাড়া নেওয়ার সময় শিক্ষার্থীরা জানায় বাস যেহেতু এয়ারপোর্ট পর্যন্ত যাবে না সেহেতু বাসের ভাড়াও ত্রিশ টাকার পরিবর্তে বিশ টাকা দেব। একথা বলার পরে বাসের হেলপার শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ ব্যবহার শুরু করে দেয়। খারাপ ব্যবহার করার পরে শিক্ষার্থীরা ত্রিশ টাকা করেই ভাড়া দেয়। সবাই যখন বাস থেকে নেমে যায় তখন এক শিক্ষার্থী হেলপারের ছবি তুলতে গেলে বাসের হেলপার তার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেয়। এর প্রতিবাদ করায় ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করে চলন্ত বাস থেকে রাস্তার ফেলে দেয়। বাস থেকে পড়ে সেই শিক্ষার্থী পায়ে আঘাত পান এবং তার মোবাইল ফোন ভেঙ্গে যায়।

এই ঘটনা দেখে অপর শিক্ষার্থী প্রতিবাদ করতে এলে তাকেও মারধর করে ওই হেলপার। একপর্যায়ে হেলপার বাসের চালককে নির্দেশ দেয় বাস দ্রুত চালানোর জন্য। অজ্ঞাত এক ব্যক্তিকে ফোন করে হেলপার জানায় একজনকে পেয়েছি , একে আটকে রেখে অনেক ইনকাম করা যাবে। সেই সাথে শিক্ষার্থীর উপর চালাতে থাকে চড় থাপ্পড়। এক পর্যায়ে হেলপার শিক্ষার্থীকে হুমকি দিতে থাকে, তোর কিডনি বিক্রি করে দেব, তোর জীবন নষ্ট করে দেব এসব বলে। বাসের চালক তখন ছিল নিশ্চুপ। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করে তার কাছে থাকা মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয় বাসের হেলপার।
এই ঘটনার প্রতিবাদে দুপুরের পর থেকেই সদরঘাট এলাকায় আসা ভিক্টর ক্ল্যাসিক পরিবহনের বাসগুলো আটক করতে থাকে কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৩১ টি বাস আটক করে বাসের চাবি নিজেদের কাছে রেখে দেয় শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা জানায়, এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা যেই ব্যক্তি ঘটিয়েছে, যারা এর সাথে জড়িত তাদেরকে নিয়ে আসতে হবে, এবং সেটা মালিক পক্ষকেই নিয়ে আসতে হবে। যেহেতু তারা মালিক পক্ষের চাকরি করে, সেহেতু মালিক পক্ষের দায়িত্ব হচ্ছে এদের নিয়ে আসা এবং এদের আইনের হাতে সোপর্দ করা। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হয়েছে , তাদের যে মোবাইল ছিনতাই হয়েছে , তাদের যে শারীরিক ক্ষতি হয়েছে , এই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। আর ভবিষ্যতে কোনো শিক্ষার্থীর হাফ ভাড়া নিয়ে যেন কোন সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। এবং ওদের মুসলেকা দিতে হবে শুধুমাত্র কবি নজরুলের শিক্ষার্থীদের সাথেই নয়, কোনো শিক্ষার্থীর সাথেই খারাপ ব্যবহার করতে পারবে না।