শাহাদাৎ বাবু, নোয়াখালী প্রতিনিধি:
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলতি মৌসুমে জেলার সর্বোচ্চ। এ অতিবৃষ্টির কারণে জেলার উপকূলীয় এলাকার বহু নিচু অঞ্চল প্লাবিত হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে জনসাধারণ।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর, চরহাজারী, চরএলাহী ও দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার বেশ কিছু নিম্নাঞ্চল পানিতে ডুবে গেছে। স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতার জোয়ারের পানিতে নদনদীর তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়ে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও ফসলের মাঠ পানির নিচে চলে গেছে।
জেলা শহর মাইজদীতে টানা বৃষ্টিতে পৌর এলাকার ফ্ল্যাট রোড, মাস্টারপাড়া, আল-ফারুক একাডেমি সড়ক, নোয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ সড়কসহ বেশ কিছু সড়ক প্লাবিত হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগও বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
আবহাওয়া ও দুর্যোগ পরিস্থিতি
জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। নিম্নচাপের প্রভাবে আরও ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে, হাতিয়া সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে উপকূলীয় বাঁধে। হাতিয়ার মেঘনা নদীতে এমভি ফাহিম নামের একটি পণ্যবাহী ট্রলার চার কোটি টাকার মালামালসহ ডুবে গেছে।
মানবিক বিপর্যয়
জোয়ারের তোড়ে কোম্পানীগঞ্জ ও হাতিয়ার বিভিন্ন বাঁধ ভেঙে যায়। এতে ঘরবাড়ি, মাছের ঘের, ধান ও সবজিক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। নিঝুমদ্বীপের নিম্নাঞ্চল ব্যাপকভাবে প্লাবিত হয়ে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
হাতিয়ার বিভিন্ন চরের (চরইশ্বর, নলচিরা, ঢালচর, সুখচর, চরঘাসিয়া) সড়ক ও বসতঘরে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন উপকূলবাসী। ঝড়ো বাতাস ও উত্তাল সাগরের কারণে টানা তিন দিন ধরে নোয়াখালীর সাথে হাতিয়ার নৌ-যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
প্রশাসনের পদক্ষেপ
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমদ বলেন, “বৈরী আবহাওয়া মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, রেড ক্রিসেন্টসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা মাঠে কাজ করছে।”