সত্যজিৎ দাস, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার দত্তগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন প্রদীপ বৈদ্য (২২) নামে এক বাংলাদেশি যুবক। শনিবার (৩১ মে) রাতে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কৈলাশহর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
নিহত প্রদীপ বৈদ্য কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের দত্তগ্রামের বাসিন্দা। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তার পিতা শৈলেন্দ্র বৈদ্য দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ এবং পরিবারটি চরম দারিদ্র্যের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। প্রদীপ ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।
নিখোঁজের পর খোঁজ মিলল মরদেহের
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে প্রদীপ নিখোঁজ ছিলেন। পরিবারের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুঁজির পর রবিবার সকালে জানতে পারেন, ভারতের অভ্যন্তরে বিএসএফের গুলিতে প্রদীপ নিহত হয়েছেন। বর্তমানে তার মরদেহ ভারতের কৈলাশহর হাসপাতালে মর্গে রাখা আছে।
স্থানীয়দের বক্তব্য ও প্রেক্ষাপট
শরীফপুর ইউনিয়নের ওয়ার্ড সদস্য জয়নুল ইসলাম বলেন, “প্রদীপ দারিদ্র্যের কারণে ঝুঁকি নিয়ে হয়তো সীমান্ত পাড়ি দিয়েছিল। সীমান্ত এলাকায় কিছু চোরাকারবারী সক্রিয় রয়েছে, যারা গরিব যুবকদের নানা প্রলোভনে ফাঁসায়।”
বিজিবির অবস্থান
এ বিষয়ে ৪৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম জাকারিয়া বলেন, “ঘটনাটি ভারতের অভ্যন্তরে ঘটেছে। আমরা বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রদীপের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। মরদেহ ভারতের একটি হাসপাতালে রয়েছে এবং আমরা কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা ফেরত আনার চেষ্টা করছি।”
তিনি আরও জানান, এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কুলাউড়া থানায় কোনো সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়নি, তবে বিজিবি পরিবারকে তা করতে পরামর্শ দিয়েছে।
উদ্বেগ ও দাবি
এ ঘটনায় সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তাঁরা দ্রুত প্রদীপের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত এবং বিএসএফের গুলিবর্ষণের বিষয়ে কঠোর কূটনৈতিক প্রতিবাদ জানানোর দাবি জানিয়েছেন।