জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যদের জন্য সরকারি স্কুলে ভর্তিতে ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের আদেশ বিতর্কের মুখে বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। গতকাল সোমবার ওই আদেশটি বাতিল করা হয়েছে।
মঙ্গলবার আমার দেশকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সরকারি মাধ্যমিক শাখার উপসচিব মোসাম্মৎ রহিমা আক্তার।
তিনি বলেন, আদেশটি বাতিল করায় আগের ভর্তির নীতিমালাই বহাল থাকবে। তবে কিসের ভিত্তিতে নতুন কোটা চালুর সিদান্ত হয়েছিল, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।
এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা আদেশটির বিষয়ে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে ২ মার্চ সব সরকারি স্কুল প্রধানদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়।
উপসচিব মোসাম্মৎ রহিমা আক্তার স্বাক্ষরিত শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা অফিস আদেশে বলা হয়েছিল- মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪ এ আহত/শহীদ পরিবারের সদস্যদের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ৫ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে। মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪ এ আহত/শহীদ পরিবারের সদস্যদের আসন নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রমাণপত্র/গেজেটের সত্যায়িত কপি আবেদনপত্রের সাথে সংযুক্ত করতে হবে এবং ভর্তির সময় মূল কপি প্রদর্শন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে ইস্যুকৃত মুক্তিযোদ্ধা সনদ/জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪-এ শহীদদের গেজেট যথাযথভাবে যাচাই করে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪ এ আহত/ শহীদ পরিবারের সদস্যদের পাওয়া না গেলে মেধা তালিকা থেকে উক্ত আসনে ভর্তি করতে হবে। কোন অবস্থায় আসন শূন্য রাখা যাবে না।
এ আদেশ জারির পর দেশজুড়ে নতুন বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে। যে কোটা বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলন গড়ে উঠেছিল এবং অনেক জীবন এবং রক্তের বিনিময়ে সেই আন্দোলন থেকেই স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে আবার নতুন করে কোটা পদ্ধতির চালুর বিষয়টি সেই আন্দোলনের চেতনাবিরোধী বলে মন্তব্য করেন অনেকে।
স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে কোটা প্রয়োগের বিরোধিতা করে সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্র অধিকার পরিষদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি জুলাই অভ্যুত্থানে হতাহত পরিবারের সন্তানদের সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করে সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের কোটা থাকতে পারে না বলে স্পষ্ট বার্তা ছাত্র অধিকার পরিষদ নেতা বিন ইয়ামিন মোল্লা।