রাজধানীর উত্তরখানে হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষ মোহাম্মাদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়াকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১০ মার্চ) ভোরে এই ঘটনা ঘটে। পরে তাকে উত্তরার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
Details of the incident
সাইফুর রহমান ভূঁইয়া পরিবারসহ শান্তিনগর এলাকায় বসবাস করতেন। তবে সম্প্রতি তিনি উত্তরখান থানার একটি ভাড়া বাসায় একাই থাকতেন। কলেজটির সাবেক শিক্ষার্থী রেজাউল রায়হান জানান, সাইফুর রহমান ভূঁইয়াকে সোমবার ভোরে (সেহেরির সময়) দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করে হত্যা করা হয়। তার গলায় ও মাথায় রামদার কোপের দাগ ছিল। হাসপাতালের চিকিৎসকরা থাকলেও, পুলিশে খবর না দেওয়ার বিষয়ে অভিযোগ করেছেন তিনি।
কলেজের অভ্যন্তরীণ কোন্দল
রেজাউল রায়হান আরও জানান, সরকার পরিবর্তনের পর কলেজের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে অধ্যক্ষসহ কলেজের অধিকাংশ শিক্ষককে পদত্যাগ করিয়ে নতুন করে পদোন্নতি দেওয়ার দাবি জানান। সাইফুর রহমান ভূঁইয়াকে উপাধ্যক্ষ করা হয়েছিল। তিনি এক সময় বিএনপির মতাদর্শী হলেও আওয়ামী লীগের আমলে সেমিনারে অংশগ্রহণের কিছু ছবি ভাইরাল হয়। এসব ছবি দেখিয়ে কিছু শিক্ষার্থী তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন। এ ঘটনাটি কলেজে শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে কোন্দল তৈরি করেছিল বলে জানা গেছে।
উত্তরখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: জিয়াউর রহমান হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সাইফুর রহমান ভূঁইয়ার শরীরে বিভিন্ন স্থানে দেশীয় অস্ত্রের দাগ রয়েছে। এই ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন এবং পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।
হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষ মোহাম্মাদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়ার হত্যাকাণ্ড একটি নির্মম ও নৃশংস ঘটনা। এই ঘটনায় কলেজের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং রাজনৈতিক প্রভাবের বিষয়টি সামনে এসেছে। আশা করা যায়, পুলিশের তদন্তের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের আসল কারণ ও দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। এ ধরনের ঘটনা যেন পুনরাবৃত্তি না হয়, সে জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি।