জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বর্তমানে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে, যা দেশের বিভিন্ন সেক্টরে সংস্কারের উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করছে। এই আলোচনা মূলত দেশের সাংবিধানিক, নির্বাচনী, প্রশাসনিক, দুর্নীতি দমন এবং বিচার বিভাগের সংস্কারের ওপর মনোনিবেশ করবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতামত পাওয়ার পর তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্য সৃষ্টি করা হবে।
প্রথম পর্যায়ে, ২০ মার্চ এলডিপির সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে। পরে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এসব আলোচনার মাধ্যমে তাদের সুপারিশগুলো নিয়ে মতামত নেওয়া হবে, এবং সব দলের মতামত নেওয়ার পর একত্রে বৃহত্তর আলোচনা করা হবে। যেখানে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সব সদস্য উপস্থিত থাকবেন।
এই আলোচনার মূল বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং বিচার বিভাগ সংস্কারের সুপারিশগুলো। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে কমিশনটি ১৬৬টি সুপারিশ জমা দেয়, যা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে পাঠানো হয়েছে। এই সুপারিশগুলো নিয়ে দলগুলোর মতামত যাচাই করার জন্য ৩৭টি রাজনৈতিক দলকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল।
এখন পর্যন্ত ১৫টি দল তাদের প্রাথমিক মতামত জমা দিয়েছে। অন্যদিকে, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামসহ ১৪টি দল তাদের পূর্ণাঙ্গ মতামত আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জমা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কমিশন আশা করছে, এসব মতামতের আলোকে আলোচনা আরও গভীর ও বিস্তারিত হবে এবং দেশব্যাপী সংস্কারের প্রস্তাবনাগুলি একটি ঐকমত্যে পৌঁছাবে।: জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত বছরের আগস্ট মাসে গঠিত হয়, যখন শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়। এই সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল দেশব্যাপী বিভিন্ন খাতে সংস্কার আনা, বিশেষত সংবিধান ও নির্বাচনী ব্যবস্থায়। গত ফেব্রুয়ারি মাসে এসব কমিশন তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করে, এবং তারপর থেকেই জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কাজ শুরু করেছে।
এখন, দেশের রাজনৈতিক দলগুলো এসব সংস্কারের বিষয়ে একত্রে কাজ করার লক্ষ্যে একে অপরের সঙ্গে মতবিনিময় করছে, যার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।