ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) একটি ম্যাচ ঘিরে তৈরি হয়েছে তীব্র বিতর্ক। গুলশান ক্রিকেট ক্লাব ও শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের মধ্যকার ম্যাচে দুই ব্যাটারের বিতর্কিত আউট নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে দেশি-বিদেশি সংবাদমাধ্যম ও ক্রিকেট অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে।
ম্যাচে শাইনপুকুরের প্রয়োজন ছিল মাত্র ছয় রান, হাতে ছিল উইকেট। ঠিক এমন সময় ঘটে এমন কিছু, যা অনেকের চোখেই ‘ইচ্ছাকৃত আত্মাহুতি’ বলে মনে হয়েছে। বিশেষ করে উইকেটকিপার-ব্যাটার মিনহাজুল আবেদীন সাব্বিরের আউটটি ঘিরে তৈরি হয় তীব্র সমালোচনা।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সাব্বির উইকেট ছেড়ে অনেকটা সামনে এগিয়ে খেলতে যান, কিন্তু বলটি ব্যাটে লাগাতে ব্যর্থ হন। গুলশানের উইকেটকিপার আলিফ হাসান প্রথমে বল ধরতে না পারলেও সাব্বির ব্যাট নামিয়ে মাটি ছোঁয়াননি। ফলে আলিফ দ্বিতীয় চেষ্টায় স্টাম্প ভেঙে দেন এবং সাব্বির হন স্টাম্পড। ঘটনাটি এতটাই অস্বাভাবিক মনে হয়েছে যে, ধারাভাষ্যকার পর্যন্ত বলেছিলেন, “এটা দুঃখজনক”।
এই মুহূর্তের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে অনলাইনে। অনেক সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটারও ভিডিওটি শেয়ার করে তাদের বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের কোচ ও সেক্রেটারি খালেদ মাহমুদ সুজন, যিনি শাইনপুকুর ক্লাবের জয়েন্ট সেক্রেটারি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
ম্যাচ শেষে কোনো দলের কেউই সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি, এমনকি সাংবাদিকদের মাঠেও প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। শেষ ব্যাটার হিসেবে সাব্বির আউট হওয়ার পর মাত্র পাঁচ রানে জয় পায় গুলশান ক্রিকেট ক্লাব।
পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। বিসিবি বলেছে, “ক্রিকেটের সম্মান ও নৈতিক মান বজায় রাখতে আমরা সর্বোচ্চ অঙ্গীকারবদ্ধ। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের শূন্য সহনশীলতা নীতি রয়েছে।”
বিসিবির দুর্নীতি দমন ইউনিট এবং লিগের টেকনিক্যাল কমিটি ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। যেকোনো ধরনের অনিয়ম বা অসদাচরণের ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছে বোর্ড।
এই ঘটনায় বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভাবমূর্তি যেমন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে, তেমনি আগামী দিনে ঘরোয়া ক্রিকেটে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তাও নতুন করে সামনে এসেছে।