বিসিবির (বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড) ২৩৮ কোটি টাকা ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংক থেকে সরিয়ে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ ও উচ্চ সুদদাতা ব্যাংকে রাখার সিদ্ধান্তটি আর্থিক দৃষ্টিকোণ থেকে যুক্তিসঙ্গত মনে হতে পারে—বিশেষ করে যদি উদ্দেশ্য হয় বোর্ডের সম্পদের নিরাপত্তা ও আয় বৃদ্ধি। ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের মন্তব্য “রেট বেশি পাওয়া যাচ্ছে” বিষয়টিকে ঘিরে তাৎক্ষণিকভাবে একটা পজিটিভ টোন তৈরি করলেও, এর গভীরে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন রয়ে যায়:
“বিসিবির টাকা সরিয়ে ফেলাটা ভালোই হয়েছে, রেট বেশি পাওয়া যাচ্ছে” – বললেন ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা কোথায়?
সরকারি বা আধা-সরকারি সংস্থাগুলোর অর্থ স্থানান্তর হলে, তা অবশ্যই স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় এবং বোর্ড বা আর্থিক নীতির অনুমোদন নিয়ে হওয়া উচিত। এখানে প্রশ্ন হচ্ছে—এই সিদ্ধান্তটি কারা নিয়েছে, কতটা নিরপেক্ষ ছিল, এবং কীভাবে ব্যাংক বাছাই করা হয়েছে?
ঝুঁকিপূর্ন ব্যাংক থেকে বিসিবির ২৩৮ কোটি টাকা সরিয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকে রাখা হয়েছে ভালো ইন্টারেস্ট পাওয়ার জন্য। এ বিষয়টিকে ইতিবাচকই দেখছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত সুবিধা জড়িত কি না?
বাংলাদেশে ব্যাংকিং খাতে রাজনৈতিক প্রভাব একটি বাস্তবতা। তাই বোর্ডের টাকা কোন ব্যাংকে রাখা হচ্ছে, তার পেছনে কোনো চাপ বা লবিং ছিল কি না—তা জানা গুরুত্বপূর্ণ।
‘রেট বেশি’ পাওয়ার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ‘নিরাপত্তা’
সুদের হার বেশি পাওয়া একটা লাভজনক দিক, কিন্তু যদি সেই ব্যাংকটিই ভবিষ্যতে সংকটে পড়ে, তবে বিসিবির টাকা বিপন্ন হতে পারে। অতীতে দেখা গেছে, কিছু ব্যাংক উচ্চ সুদের প্রলোভনে বড় অঙ্কের আমানত নিয়ে পরে দেউলিয়া হওয়ার মুখে পড়েছে।
প্রয়োজন ছিল কি?
যে ব্যাংকগুলো থেকে টাকা সরানো হয়েছে, সেগুলোর ঝুঁকি মূল্যায়ন কীভাবে করা হয়েছে? এটা কি বাংলাদেশ ব্যাংক বা স্বতন্ত্র আর্থিক বিশ্লেষকের পরামর্শ অনুযায়ী, নাকি শুধুই বোর্ডের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত?
আসিফ মাহমুদের মন্তব্যে এক ধরনের আত্মতুষ্টির ইঙ্গিত রয়েছে, যা হয়তো সবদিক বিবেচনা না করেই করা হয়েছে। বিষয়টি ভালো হতে পারে—যদি এটি নীতিগত, স্বচ্ছ এবং আর্থিকভাবে সুরক্ষিতভাবে পরিচালিত হয়। অন্যথায় এটি বড় এক প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্তে পরিণত হতে পারে।