সমাপ্তী খান, মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি) প্রাঙ্গণে অবস্থিত প্রায় সাড়ে তিন শতাব্দী পুরোনো ঐতিহাসিক পীর শাহজামান দীঘি বর্তমানে অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। দীঘিটির চারপাশে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা ও বর্জ্যের স্তুপ এর পরিবেশগত ভারসাম্য ও নান্দনিকতা নষ্ট করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দীঘিটির সংরক্ষণ ও সৌন্দর্যবর্ধনের দাবিতে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আজ ২৫ মে (রবিবার) শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে ২য় গেট ও ১ম গেট ঘুরে ‘প্রত্যয় একাত্তর’-এর সামনে এসে সমাবেশে মিলিত হন। পরে তারা ভাইস-চ্যান্সেলরের কাছে একটি পাঁচ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি পেশ করেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১. দীঘির চারপাশে হাঁটার উপযোগী বাঁধ নির্মাণ
২. বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা দেয়াল নির্মাণ
৩. পরিকল্পিত বৃক্ষরোপণ ও পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা
৪. নির্ধারিত দূরত্বে ময়লা ফেলার স্থান স্থাপন
৫. দীঘির ইতিহাস সংবলিত একটি স্থায়ী ফলক নির্মাণ
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ বলেন, “আমরা ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য ও পরিবেশ রক্ষায় কাজ করছি। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে এবং বাস্তবায়নের চেষ্টা থাকবে।”
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ফোরকান হোসেন বলেন, “ভিসি স্যারের নেতৃত্বে আমরা ইতিবাচক পরিবর্তন দেখছি। দীঘিটি ঘিরে সৌন্দর্যবর্ধনে জরুরি পদক্ষেপ নিলে এটি আমাদের গর্বের প্রতীক হয়ে উঠবে।”
সিপিএস বিভাগের শিক্ষার্থী আখতারুজ্জামান সাজু বলেন, “দীঘির পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ দোকানপাট দীঘির সৌন্দর্য নষ্ট করছে এবং বর্জ্য ফেলে পরিবেশ দূষণ করছে। এই দোকানগুলো দ্রুত সরাতে হবে।”
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলাম সোহাগ বলেন, “এই দীঘিটি শুধু একটি জলাধার নয়, এটি আমাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও পরিবেশের প্রতীক। আমরা এর বর্তমান অবস্থায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন, এই দীঘি শুধু একটি প্রাকৃতিক সম্পদ নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হলে দীঘিটি তার গৌরব ফিরে পাবে এবং একটি পরিবেশবান্ধব ও মনোমুগ্ধকর ক্যাম্পাসে পরিণত হবে।