Shahiduzzaman Shimul, Satkhira:
শিক্ষা সনদ ইস্যু হওয়ার ৮ মাস আগেই সেই সনদেই চাকরি শুরু। এরপর হয়েছেন প্রধান শিক্ষক তাও আবার ভুয়া সনদে। এসব অভিযোগ এক আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
রোববার (১৩ জুলাই) সকালে স্যানিটারি ন্যাপকিন চুরি শিক্ষক শিক্ষকদের গালিগালাজ ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এই আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ক্লাস বর্জন করে মানববন্ধন করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
অভিযুক্ত মমিনুর রহমান মোমিন । তিনি সাতক্ষীরা সদরের ব্রহ্মরাজপুর সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সাতক্ষীরা পৌর বঙ্গবন্ধু পরিষদের আহ্বায়ক।
মানববন্ধনে শিক্ষকরা বলেন, প্রধান শিক্ষক মোমিনুর রহমান শিক্ষকদের সাথে সব সময়ে গালিগালাজ ও খারাপ ব্যবহার করেন। এ ছাড়া সহকারী শিক্ষককে পিটানোসহ আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
তিনি স্কুলে থাকলে আমরা কোনো ক্লাস নিবো না বলে জানান শিক্ষকদের একাংশ।
এ দিকে অনেক শিক্ষার্থী ক্লাস বর্জন করে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছে।
অপরদিকে, শিক্ষার্থীদের অভিযোগ মেয়েদের সেনেটারি ন্যাপকিন চুরি, শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন প্রধান শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরা ক্লাস করবো না। এ সময় তারা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগসহ বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে।
খবর পেয়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও পুলিশের একটি দল উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করে।
অনুসন্ধানে বিভিন্ন কাগজপত্র যাচাই করে দেখা গেছে, ব্রমরাজপুর এতো মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমিনুর রহমান মুকুল শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছেন ১৯৯৫ সালের পহেলা জানুয়ারী। তবে যে সনদে তিনি শিক্ষক হয়েছেন সেটি ইস্যু করা হয়েছে একই বছরের আগস্ট মাসের ১৯ তারিখে। অর্থাৎ শিক্ষা সনদ ইস্যু করার ৮ মাস ১৮ দিন আগেই সেই সনদে চাকরি শুরু করেছেন তিনি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মোমিনুর রহমান মুকুল প্রধান শিক্ষক হয়েছেন ২০০৯ সালের ৩১ জানুয়ারি। প্রধান শিক্ষক হতে যে বিএড সনদ দেখিয়েছেন সেখানেও প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। তার বিএড সনদ দেখানো হয়েছে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ নামক একটি প্রতিষ্ঠান থেকে । তবে প্রধান শিক্ষক হওয়ার এক বছর আগে অর্থাৎ ২০০৮ সালের মে মাসের ১৫ তারিখে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের কার্যক্রম ও সকল সার্টফিকেট বাতিল করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গালিগালাজের বিষয়টি অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক মোমিনুর রহমান মুকুল বলেন, আমি কড়া প্রধান শিক্ষক হওয়ায় শিক্ষকরা আমার বিরুদ্ধে লেগেছে। তবে স্কুলের অর্থ আত্মসাথের বিষয়ে তিনি বলেন আওয়ামীলীগের সময়ে ভবন বরাদ্দের জন্য সাতক্ষীরা সদর-২ আসনের এমপিসহ বিভিন্ন দপ্তরে ঘুষ দেওয়া লেগেছে। যে কারনে স্কুল ফান্ডের টাকা নিয়ে ঘুষ দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, কেউ না চাইলে আমি স্কুলে থাকবো না। এ ছাড়া জাল সনদে চাকুরির বিষয়টা তিনি অস্বীকার করেন।
সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নারায়ন চন্দ্র মন্ডল বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমাদের কাছে রয়েছে। দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান।