Jasim Uddin, Nobiprabi Correspondent:
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এইচ. এম. মোস্তাফিজুর রহমানকে নিজ বিভাগের এক ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে যৌন হয়রানি এবং অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে অপসারণ করা হয়েছে।
সোমবার (২৬ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. তামজিদ হোসাইন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের “যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ নীতিমালা ২০০৮”-এর বিধি ৩(৩.১)(ঝ) ও (ঠ), সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-এর বিধি ২(খ), এবং নোবিপ্রবি আইন ২০০১-এর ধারা ৪৭(৮) লঙ্ঘন করেছেন। তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রিজেন্ট বোর্ডের ৬৫তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাঁকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়।
অভিযোগ এবং তদন্ত প্রক্রিয়া
২০২৪ সালের ২৩ অক্টোবর ভুক্তভোগী ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরবর্তীতে ৩০ অক্টোবর অভিযুক্ত শিক্ষককে দায়িত্বমুক্ত, ২০২৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি সাময়িক বরখাস্ত এবং ১০ ফেব্রুয়ারি শোকজ করা হয়। তদন্ত শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে চূড়ান্ত শাস্তি কার্যকর করা হয়।
বিতর্ক এবং শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া
শাস্তির এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী প্রশ্ন তুলছেন, শুধুমাত্র শিক্ষক নয়, উভয় পক্ষই সাবালক এবং সম্মত ছিল বলে ছাত্রীকেও শাস্তির আওতায় আনা উচিত ছিল।
নোবিপ্রবির এসিসিই বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মেহেদী বলেন, “যেখানে রাবিতে একই ধরনের ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়ে শাস্তি পেয়েছে, সেখানে এখানে শুধু শিক্ষককে শাস্তি দেওয়া হলো কেন? বিশ্ববিদ্যালয় কি তাহলে পক্ষপাতিত্ব করছে?”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবস্থান
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, “ছাত্রীটির বিষয়েও আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাকে রিজেন্ট বোর্ডে তিরস্কার করা হয়েছে। ভবিষ্যতে তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হবে।”