সমাপ্তী খান , মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি:
বিশ্বখ্যাত শিক্ষা সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশন (THE) প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং ২০২৫’-এর তালিকায় এবারও স্থান পায়নি মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি)। এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা।
২০২৫ সালের র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের ১১৫টি দেশের ২ হাজারের বেশি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে। বাংলাদেশের ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলেও মাভাবিপ্রবির অনুপস্থিতি ভাবিয়ে তুলেছে সংশ্লিষ্টদের।
বাংলাদেশের অবস্থান: এগিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের ৮টি সরকারি এবং ১২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে
- ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ১০১–২০০তম অবস্থানে থেকে বাংলাদেশের মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে।
- AIUB, ব্র্যাক, গ্রিন ইউনিভার্সিটি ও UIU রয়েছে ৬০১–৮০০তম অবস্থানে।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে তালিকায় রয়েছে:
গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শীর্ষে), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
মাভাবিপ্রবির বাদ পড়ার কারণ ব্যাখ্যা করলেন গবেষণা সেলের পরিচালক
মাভাবিপ্রবি র্যাঙ্কিংয়ে স্থান না পাওয়ার বিষয়ে গবেষণা সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল নাসির বলেন:
“র্যাঙ্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত মানদণ্ডে আমাদের ঘাটতি রয়েছে। গবেষণায় বিনিয়োগ কম, আন্তর্জাতিক প্রকল্প বা যৌথ গবেষণার সুযোগ সীমিত। র্যাঙ্কিংয়ের জন্য কমপক্ষে ৩৫টি বিভাগ ও ৭০০ জন শিক্ষক থাকা জরুরি, যেখানে আমরা অনেক পিছিয়ে। পাশাপাশি গত পাঁচ বছরে ৫০০টির বেশি ইনডেক্সড জার্নালে প্রকাশনার শর্তও আমরা পূরণ করতে পারিনি।”
তিনি আরও জানান, সময়মতো র্যাঙ্কিং সংশ্লিষ্ট তথ্য পাঠানো না যাওয়াও একটি বড় কারণ। তবে ইতোমধ্যে র্যাঙ্কিং কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং ডেটা সংগ্রহ ও পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
র্যাঙ্কিং শুধু তালিকা নয়, এটি একটি বার্তা
বিশ্ববিদ্যালয় র্যাঙ্কিং এখন কেবল একটি তালিকা নয়; এটি শিক্ষা, গবেষণা, আন্তর্জাতিকীকরণ ও সামাজিক সম্পৃক্ততার মানদণ্ড।
কিছু শিক্ষার্থীর মতে, তালিকায় না থাকা ব্যর্থতা নয়—বরং এটি উন্নয়ন পরিকল্পনা নির্ধারণে সুযোগ।
বিশ্বমানের স্বীকৃতি পেতে হলে:
- গবেষণায় বরাদ্দ ও সক্ষমতা বৃদ্ধি,
- আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা,
- শিল্প ও সমাজের সঙ্গে কার্যকর সংযোগ
- এবং শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
Conclusion
র্যাঙ্কিংয়ে স্থান না পাওয়া হতাশাজনক হলেও এটি শেষ নয়। ভবিষ্যতে পরিকল্পিত পদক্ষেপ, গুণগত উন্নয়ন এবং তথ্য-উপাত্তের সঠিক ব্যবহার মাভাবিপ্রবিকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পরিচিত করতে পারে—এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।