চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবিতে চলা অনশন প্রায় ৩৪ ঘণ্টা পর ভেঙেছেন ৯ জন শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের জরুরি বৈঠকে দাবির পক্ষে সিদ্ধান্ত আসার পর মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে তারা অনশন ভাঙেন।
চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এ দাবির ভিত্তিতে গত সোমবার দুপুর ১২টা থেকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা, যা পরে একই দিন বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে অনশনে রূপ নেয়।
অনশনের প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর দুজন শিক্ষার্থী শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাদেরকে স্যালাইন দিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আন্দোলনের সময় একাধিকবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করেন, কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিতে অটল থাকেন।
অবশেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডাকে। রাত ১০টার দিকে শেষ হওয়া ওই বৈঠকে চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
তবে শুধু সিদ্ধান্তেই সন্তুষ্ট থাকেননি শিক্ষার্থীরা। তারা চেয়েছিলেন, স্থানান্তর প্রক্রিয়া কতদিনের মধ্যে শেষ হবে—সে বিষয়ে একটি নির্দিষ্ট রোডম্যাপ। এই নিয়ে রাত দেড়টা পর্যন্ত প্রশাসনের সঙ্গে টানা আলোচনার পর তারা অনশন ভাঙার সিদ্ধান্ত নেন।
সিন্ডিকেট সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, চারুকলা অনুষদ চালু করা হবে এবং এর অধীনে চারটি নতুন বিভাগ—ড্রয়িং ও প্রিন্টিং, ফিল্ম মেকিং, সিরামিক্স এবং স্কাল্পচার—যোগ করা হবে। এ ছাড়া বর্তমান চারুকলা ইনস্টিটিউটটিও সমানভাবে কার্যকর থাকবে।
এ বিষয়ে চবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন বলেন, “শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সিন্ডিকেট প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং তারা অনশন ভেঙেছেন।”
অন্যদিকে, উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক শামিম উদ্দিন খান বলেন, “চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দিনক্ষণ এখনো নির্ধারণ করা যায়নি। তবে সবাই জানেন, সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হতেই হয়।”