সমাপ্তী খান, মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি:
“একের রক্ত, অন্যের জীবন—রক্তই হোক আত্মার বাঁধন” এই মহৎ প্রত্যয়ে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি) ইউনিটের আয়োজনে এবং বাঁধন বিভাগীয় জোন-১ এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হলো দিনব্যাপী উৎসব “চড়ুইভাতি-২০২৫”।
শুক্রবার (২৩ মে ২০২৫) মাভাবিপ্রবি ক্যাম্পাসস্থ সন্তোষ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় হাই স্কুল প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই মিলনমেলাটি পরিণত হয় বাঁধনের স্বেচ্ছাসেবীদের প্রাণবন্ত এক মহাসম্মেলনে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মাভাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ বলেন, “বাঁধন নিঃস্বার্থ মানবসেবার যে অনন্য উদাহরণ স্থাপন করেছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। রক্তদানের মতো মহৎ কার্যকলাপে বাঁধনের ভূমিকা অসাধারণ। একে কোনো আত্মীয়তা, কোনো স্বার্থের বাঁধনে বাঁধা যায় না। এই সংগঠন লকডাউনের কঠিন সময়েও মানুষের পাশে থেকেছে, আমিও সে অভিজ্ঞতার অংশ। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আগত অতিথিদের আমি আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানাই।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাভাবিপ্রবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. ইমাম হোসাইন, বিজিই বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম মহিউদ্দিন, এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক ড. মো. আবু জুবাইর।
আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মো. সুজায়েত হোসেন বলেন, “চড়ুইভাতি-২০২৫ শুধুমাত্র একটি আনন্দ আয়োজন নয়; এটি বাঁধনের সদস্যদের মধ্যে হৃদ্যতা, সম্প্রীতি ও ঐক্যের বন্ধন সুদৃঢ় করার এক অনন্য উপলক্ষ। মানবসেবার পথচলায় ভালোবাসা ও সম্মানই আমাদের প্রকৃত শক্তি। আমরা বিশ্বাস করি, এ আয়োজন তরুণদের মাঝে দায়িত্ববোধ ও মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করবে।”
বাঁধন বিভাগীয় জোন-১ এর সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল আলম জানান, “চড়ুইভাতি-২০২৫ আমাদের পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্ববোধকে আরও মজবুত করেছে। বাঁধনের মূল দর্শন—মানবিকতা ও স্বেচ্ছাসেবা—এই আয়োজনের প্রতিটি পরতে পরতে বিদ্যমান। সদস্যদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও আন্তরিকতা অনুষ্ঠানটিকে করে তুলেছে প্রাণবন্ত ও অর্থবহ।”
এতে অংশ নেয় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও আনন্দ মোহন কলেজ, সরকারি সা’দত কলেজ, গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ, নেত্রকোনা সরকারি কলেজ, বদরে আলম কলেজ, সরকারি গুরুদয়াল কলেজসহ মোট ৯টি ইউনিট এবং টঙ্গী সরকারি কলেজ, শেরপুর সরকারি কলেজ ও আশেক মাহমুদ কলেজ জামালপুর এই ৩টি পরিবারের সদস্যরা।
দিনব্যাপী এ উৎসবে “চাচা আপন প্রাণ বাঁচা”, “পিলো পাসিং” এবং “বল নিক্ষেপ” সহ নানা ধরণের আনন্দঘন খেলাধুলা ও মিলনীয় আয়োজনের মধ্য দিয়ে অংশগ্রহণকারীরা কাটান এক আনন্দঘন দিন।
বাঁধনের এই অনন্য আয়োজন শুধু হাসি আর খুশির নয়—এটি মানবতার বন্ধনকে আরও দৃঢ় করার এক অনবদ্য প্রয়াস।