Paikgachha representative
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাইকগাছা ক্যাম্পাস জগদ্বিখ্যাত বিজ্ঞানী পিসি রায়ের নামে নামকরণের দাবি জানিয়েছে স্যার পিসি রায় স্মৃতি সংসদ। বৃহস্পতিবার সকালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম বরাবর এ সংক্রান্ত স্মারকলিপি প্রদান করেছেন স্যার পিসি রায় স্মৃতি সংসদের নেতৃবৃন্দ। এসময় উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. এসএম মাহবুবুর রহমান, স্যার পিসি রায় স্মৃতি সংসদের সভাপতি শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আলহাজ্ব ডাঃ মুহাম্মদ কওসার আলী গাজী, সিনিয়র সহ সভাপতি প্রফেসর অশোক কুমার ঘোষ, সহ সভাপতি কৃষি বিজ্ঞানী ড. মোঃ হারুনর রশীদ, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী রফিকুল আলম সরদার, সাবেক জেলা শিক্ষা অফিসার গোলাম আযম, কৃষিবিদ জিএম এ গফুর ও ব্যাংকার শরিফুল ইসলাম।
উপজেলার লস্কর ইউনিয়নের পাইকগাছা কয়রা সড়কের পশ্চিম পাশে চক বগুড়া মৌজায় ২৫ একর জমির উপর নির্মাণ করা হচ্ছে কৃষি কলেজ। ২০১৮-১৯ সালে অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ শুরু করা হয়। তার আগে ভূমি অধিগ্রহণ সহ অন্যান্য প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর খুলনা। কলেজের সীমানা প্রাচীর এবং প্রধান ফটক নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে ৪ তলা বিশিষ্ট একটি একাডেমিক ভবন, ৪ তলা একটি প্রশাসনিক ভবন, ৪তলা বিশিষ্ট একটি ছাত্রী নিবাস ও একটি ছাত্রাবাস, ৪ তলা বিশিষ্ট একটি টিচার্স কোয়ার্টার, একটি স্টাফ কোয়ার্টার, এক তলা বিশিষ্ট একটি মসজিদ, দুই তলা বিশিষ্ট একটি ফার্ম হাউস, দুই তলা বিশিষ্ট অধ্যক্ষের বাসভবন ও অন্যান্য অবকাঠামো। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে নির্মাণাধীন কৃষি কলেজটি সংশ্লিষ্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। এরপর নির্মাণাধীন প্রতিষ্ঠানটি ১৫ জানুয়ারী পরিদর্শন করেন খুবি উপাচার্য সহ উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল। উল্লেখ্য জগদ্বিখ্যাত বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র পিসি রায় ১৮৬১ সালে পাইকগাছা উপজেলার রাড়ুলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি একাধারে রসায়নের মৌলিক গবেষক, সফল আবিস্কারক, আদর্শ শিক্ষক, সাহিত্যিক এবং সমবায় আন্দোলনের পুরোধা ছিলেন। তিনি ১৮৯৫ সালে মারকিউরাস নাইট্রাইট সহ ১৭ টি রাসায়নিক যৌগ আবিষ্কার করেন। যা বিশ্ব ব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। অবিভক্ত বাংলায় তিনি প্রথম ১৯০১ সালে বেঙ্গল কেমিক্যাল এন্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস প্রতিষ্ঠা করেন, এছাড়া তিনি নিজ গ্রাম রাড়ুলীতে উপ মহা দেশের তৃতীয় সমবায় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৫০ সালে তার পিতা হরিশ্চন্দ্র নিজ গ্রাম রাড়ুলীতে স্ত্রী ভুবন মোহিনীর নামে দেশের প্রথম বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন। বিজ্ঞানী পিসি রায় ১৯০৩ সালে রাড়ুলীতি পিতা হরিশ্চন্দ্রের নামে আরকেবিকে হরিশ্চন্দ্র ইনস্টিটিউশন এবং ১৯১৮ সালে বাগেরহাট পিসি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। পিসি বাংলায় ২২টি এবং ইংরেজিতে ১৩ টি সাহিত্য কর্ম রচনা করেন, এছাড়া তিনি ২০০ টি গবেষণা পত্র প্রকাশ করেন। পিসি রায় বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে বিজ্ঞানী বেশে বিপ্লবী ছিলেন। চির কুমার এ বিজ্ঞানী তার জীবনের সব অর্জিত সম্পদ মানব কল্যাণে দান করে গেছেন। তিনি ১৯৪৪ সালের ১৬ জুন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। স্মারক লিপি প্রদান করার মাধ্যমে স্যার পিসি রায় স্মৃতি সংসদ এর নেতৃবৃন্দ খুবির পাইকগাছা ক্যাম্পাস জগদ্বিখ্যাত বিজ্ঞানী পিসি রায়ের নামে নামকরণের দাবি জানান। স্মৃতি সংসদের এ দাবিকে সমর্থন জানিয়ে এটি বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন খুবি উপাচার্য রেজাউল করিম।