দেশের ৩৭ তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটিতে (বিএমইউ) চলমান সেমিস্টার ফি সংস্কার আন্দোলন পুনরায় উত্তাল হয়েছে।মূলত সেমিস্টার ফি নিয়ে অভিভাবকদের কাছে এসএমএস পাঠানোর প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা।
গত ২৩ এপ্রিল প্রশাসনের পাঠানো এসএমএসে বলা হয়েছে, পূর্ববর্তী সেমিস্টারের বকেয়া ফি আগামী ৫ মে ২০২৫-এর মধ্যে পরিশোধ না করলে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। শিক্ষার্থীরা একে স্পষ্ট হুমকি হিসেবে দেখছেন এবং অভিযোগ করেছেন, আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করতেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ (২৪ এপ্রিল) সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ শুরু করেছেন। শিক্ষার্থী বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিচ্ছেন এবং সেমিস্টার ফি সংস্কারের দাবিতে একযোগে আওয়াজ তুলছেন।
আন্দোলনকারীরা জানান, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুনঃনির্ধারিত ফি অনুযায়ীই সেমিস্টার ফি দিতে সম্মত হয়েছিলাম। শুধু চেয়েছিলাম আগামী বাজেটে যেনো অতিরিক্ত বাজেট পাওয়া নিশ্চিত হয়, এবং শিক্ষার্থীদের থেকে আয়ের অংশ কমানো হয়।এর পরিবর্তে আমরা পেলাম হুমকি,প্রতিটি শিক্ষার্থীর বাসায় গেলো মেসেজ। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে যাবে এবং ক্লাশ করতে না দেয়া হলে কঠিন আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে।
এর আগে, ১৯ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে একটি স্মারকলিপি পেশ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সেখানে তারা স্পষ্টভাবে দাবি করেন:
১। বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে।
২। শিক্ষার্থীদের থেকে প্রাপ্ত আয়ের অংশে যৌক্তিক হ্রাস, যা অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ফি কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ (তবে বিইউপি বা এভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো নয়) করে ফি প্রদান করবে।
শিক্ষার্থীদের চাওয়া বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এই বিষয়টি যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে এবং প্রয়োজনবোধে মাননীয় নৌ প্রধান মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করবে। সেইসাথে, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে-যিনি ব্লু ইকোনমি এবং মেরিটাইম খাত নিয়ে অত্যন্ত আগ্রহী। তারা প্রধান উপদেষ্টাকে জানাতে চায় বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ন্যায্য বরাদ্দের অভাবে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, ২০২৫ সালের বাজেটে যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিশেষ বরাদ্দ না থাকে, তাহলে এটা স্পষ্ট হবে যে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের মৌলিক দাবিকে অগ্রাহ্য করছে। এই অবস্থায় চার ডিজিটে সেমিস্টার ফি নির্ধারণ এবং যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে তারা সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এদিকে শিক্ষার্থীরা মনে করছে অভিভাবকদের ফোনে বার্তা পাঠিয়ে মানসিক চাপ সৃষ্টি করা এবং শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে দমন করার চেষ্টা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।