আতাউর রহমান কাওছার, ওসমানীনগর (সিলেট) প্রতিনিধি:
সিলেটের ওসমানীনগরে জলমহাল, নদী-হাওর, খাল-বিলসহ বিভিন্ন জলাশয়ে মা মাছ ও পোনা মাছ শিকারের ফলে দেশীয় মাছের প্রজনন ও বংশ বিস্তারে সংকট সৃষ্টি হয়েছে। যথাযথ নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারির অভাবে মাছের অভয়াশ্রমগুলো কার্যত নামমাত্র রয়ে গেছে।
বিশেষ করে উপজেলার সাদিখাল, লোম বিল, জাপার খালসহ নানা জলাশয়ে দিনরাত নৌকায় করে জেলেরা বড়শি ও নানা ধরনের জাল ফেলে অবাধে মাছ ধরছেন। বাজার ও আড়তে এসব মাছ খোলামেলাভাবেই বিক্রি হচ্ছে।
মৎস্য অফিসের তথ্যমতে, উপজেলার আটটি ইউনিয়নে ২৮টি তালিকাভুক্ত জলমহালসহ বহু খাল-বিল ও নদী রয়েছে। তবে এসব জলমহাল ইজারা নিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীরা মৎস্যজীবী সমিতির নাম ব্যবহার করে শাসন ও শোষণ চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্ষা মৌসুমে মা মাছ কম পানির দিকে এসে প্রজননের চেষ্টা করে, কিন্তু অবাধ মাছ ধরায় সেই প্রক্রিয়াই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
জানা গেছে, মাছ ধরতে জেলেরা কারেন্ট জাল, চায়না দোয়ারী, টানা জাল, লোহার সুচালো কুচা, বাঁশের ফাঁদসহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ সরঞ্জাম ব্যবহার করছেন। ফলে দেশীয় মাছের বংশ রক্ষা কঠিন হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে ওসমানীনগর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাসরুপা তাছলিম বলেন, “জনবল ও বাজেট ঘাটতির কারণে অভয়াশ্রম রক্ষা কার্যক্রম জোরালোভাবে বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। সঠিক ব্যবস্থাপনার আওতায় আনলে এখানকার মাছ রপ্তানিযোগ্য হতো এবং দেশ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারত।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন জানান, “নদী-হাওর ও বাজারগুলোতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। মা মাছ ধরা থেকে জনগণকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। মাছের বংশ বিস্তারে সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে।”
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন, মাছের প্রজনন মৌসুমে নির্দিষ্ট সময় দেশীয় মাছ ধরা নিষিদ্ধ করে প্রশাসনিকভাবে কঠোর নজরদারি চালালে দেশীয় মাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পাবে।