মোঃ গোলাম কিবরিয়া
রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি
রাজশাহীর বাজারে মৌসুমি ফল লিচু উঠতে শুরু করেছে। শহরের বিভিন্ন সড়কের পাশ ও ফুটপাতজুড়ে দেখা যাচ্ছে লিচুর দোকান। গরমের তীব্রতা উপেক্ষা করে ক্রেতারা ছুটছেন এই রসালো ও সুস্বাদু ফল কিনতে। এক বছরের অপেক্ষা শেষে রাজশাহীবাসী আবারও পাচ্ছে মৌসুমি এই ফলের স্বাদ।
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন লিচু বিক্রেতারা। তারা জানান, এবার লিচুর ফলন ভালো হওয়ায় বাজারে সরবরাহও বেড়েছে। তবে শুরুতে দাম কিছুটা চড়া থাকলেও আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তা সহনীয় হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিক্রেতারা।
শুধু স্বাদের জন্য নয়, পুষ্টিগুণেও ভরপুর লিচু। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লিচু শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে। এতে রয়েছে ভিটামিন সি, যা দাঁত, ত্বক ও হাড়ের গঠনে ভূমিকা রাখে। লিচুতে থাকা ফ্ল্যাভানয়েডস নামক উপাদান স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়া লিচু ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং বলিরেখা কমাতে কার্যকর। পটাসিয়ামসমৃদ্ধ এই ফল রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে।
এদিকে বাজারে লিচুর পাশাপাশি এসেছে আনারস, ডাব ও অল্প কিছু আম। প্রচণ্ড গরমে এসব মৌসুমি ফল যেন স্বস্তির পরশ বয়ে আনছে। ডাবের পানি আর আনারসের রস চাহিদার তুঙ্গে। বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাস জুড়ে চলবে ফলের এই সরবরাহ।
এক ক্রেতা বলেন, “এখনকার এই গরমে ঠান্ডা একটা লিচু খেলে মনটা ঠান্ডা হয়ে যায়। সত্যি বলতে, লিচুর স্বাদই আলাদা।”
ফল বিক্রেতা মিজানুর রহমান জানান, “এই বছর লিচুর মান ভালো। দাম একটু বেশি, তবে মানুষ নিচ্ছে। সামনে দাম কমতে পারে।”
রাজশাহীর লিচু দেশজুড়ে বিখ্যাত। প্রতি বছর দেশের নানা প্রান্তে এখান থেকে সরবরাহ করা হয়। কৃষক ও বিক্রেতাদের আশা, এ বছরও লিচুর বাজার থাকবে চাঙা।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরণের ফল শুধু শরীর ঠান্ডা রাখে না, বরং পানিশূন্যতা পূরণে ও রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
তাই গরমে সুস্থ থাকতে হলে মৌসুমি ফলের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রকৃতির এই উপহার সত্যিই এক অসীম নিয়ামত।