রুবেল হোসাইন, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জের হাওড়ের সোনালী অর্থকারী ফসল বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামের নিম্নাঞ্চলের আগাম বোরো ধান ইতোমধ্যে কাটা হচ্ছে। এ বছর ১ লক্ষ ৬৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে এবং প্রায় ৭ লক্ষ ৮৬ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। এ বছর খরা এবং শিলা বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকেরা বোরো চাষ নির্বিঘ্নে করতে পারছেন। আগামী ১৫ দিন আবহাওয়ার এই অবস্থা বিরাজমান থাকলে ৮০ ভাগ ধান কাটা শেষ হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলার ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম ও নিকলী–এই চারটি উপজেলা হাওড় অধ্যুষিত। হাওড় অধ্যুষিত এ চার উপজেলায় মোট আবাদি জমি রয়েছে প্রায় এক লাখ হেক্টর। চলতি মৌসুমে ইটনায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭ হাজার ৪০০ হেক্টর। মিঠামইনে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৬৯০ হেক্টর। অষ্টগ্রামে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৪ হাজার ১৭০ হেক্টর। নিকলীতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৩৮০ হেক্টর।
হাওড়ের কয়েকজন কৃষক জানান, তাদের আবাদকৃত ধানের মধ্যে স্থানীয় জাত, উফশী এবং হাইব্রিড জাতের ধান রয়েছে। তবে এ বছর উফশী ও হাইব্রিড ধানের ব্যাপক আবাদ হয়েছে। জানা যায়, জেলার ১৩টি উপজেলার সবকটিতেই বোরো আবাদ হলেও ভূ-প্রাকৃতিক কারণে হাওড় অধ্যুষিত ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম এবং নিকলী উপজেলায় সর্বাধিক পরিমাণ বোরো ধান উৎপাদিত হয়। প্রাকৃতিক কোনো দৈব-দুর্বিপাকে না পড়লে হাওড়ে প্রতি বছরই বাম্পার বোরো ফলনের সম্ভাবনা থাকে। তবে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনার মধ্যেও কৃষককে ফসল ঘরে না তোলা পর্যন্ত আতঙ্কে থাকতে হয়। আগাম বন্যা আর পাহাড়ি ঢলে প্রায় সময়েই মাঠভর্তি কৃষকের সোনালি ধান তলিয়ে যায়। এত ঝুঁকির মাঝেও এখন হাওড়ের মাঠে সরব পদচারণায় মুখর কৃষকের একটাই চিন্তা—এক খণ্ড জমিও যেন কোনো অবস্থাতেই পতিত না থাকে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোঃ সাদিকুর রহমান জানান, এ বছর কৃষকদের কাছ থেকে ৩৯ টাকা কেজি দরে ধান ও ৪৮ টাকা কেজি দরে নির্বাচিত কৃষকদের কাছ থেকে চাল সংগ্রহ করা হবে।